সংবাদদাতা, জলপাইগুড়ি, ২২ নভেম্বর’২৩ : ভারতের প্রাচীন রাজযোগের মাধ্যমে জীবনকে সুস্থ ও সুখময় করে তোলার পদ্ধতি সম্পর্কে দুদিনের শিবির অনুষ্ঠিত হলো জলপাইগুড়ি রবীন্দ্র ভবন মঞ্চে। প্রধান বক্তা প্রফেসর ই ভি স্বামীনাথন জীবনে রাজ যোগের উপযোগিতা সম্পর্কে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন যে এই যোগের প্রধান ৫ টি উপকার হলো সুস্বাস্থ্য, সুস্থ মন, সুসম্পর্ক, ক্রোধ থেকে মুক্তি এবং একাগ্রতা।

তিনি বলেন আজকের বাচ্চারা অনেক বেশি বুদ্ধিমান, সৃষ্টিশীল, পরিশ্রমী কিন্ত তারা মানসিকভাবে সংবেদনশীল। তাই শিশু আত্মহত্যার ঘটনা দিন দিন বেড়েই চলেছে। এর প্রধান কারণ হিসেবে তিনি ডিজিটাল আসক্তির কথা বলেন। এই আসক্তি বাচ্চাদের মধ্যে অবসাদের জন্ম দিচ্ছে যা তাদের আত্মহত্যার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। তিনি বলেন প্রধান সাফল্য হলো যখন জীবনের যেকোন বিপরীত পরস্থিতিতেও আমরা স্থির থাকতে পারবো। একগ্রতা সম্পর্কে তিনি স্বামী বিবেকানন্দের দৃষ্টান্ত দিয়ে বলেন প্রাচীন ভারতে শুধু একটি শিক্ষার ওপরেই জোর দেয়া হতো আর তা হলো একাগ্রতা। সেই একাগ্রতা এখন আমাদের শিক্ষা পদ্ধতির থেকে সম্পূর্ণ রূপে নিশ্চিহ্ন। হার্ট অ্যাটাকের বাড়বাড়ন্ত সম্পর্কে তিনি একটু রসিকতার সাথেই বলেন যে আগে হার্ট অ্যাটাকের জন্য দরকার হতো চল্লিশোর্ধ বয়স, মেদবহুলতা ও জিন গত কারণ।

কিন্ত এখন একটিই কারণ যথেষ্ট আর তা হলো মানুষটির হার্ট থাকা চাই। এরজন্য তিনি বর্তমান মানুষের জীবন শৈলী কে দায়ী করে বলেন রাজযোগের দ্বারা নিজের জীবন শৈলী পরিবর্তন করে হার্ট তথা যেকোন শারীরিক ও মানসিক রোগের চিরতরে নিরাময় সম্ভব। প্রফেসর স্বামীনাথন ১৯৯৮ থেকে তৎকালীন ডি আর ডি ও প্রধান এ পি জে আব্দুল কালামের তত্বাবধানে গড়ে ওঠা প্রজেক্টের সাথে যুক্ত যেখানে পুলিশ, মিলিটারি ও প্যারা মিলিটারি দের স্ট্রেস মুক্তির জন্য নিয়মিত রাজযোগের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। রাজযোগ কে আরও গভীর ভাবে বোঝার জন্য তিনি মহাভারতের এক দৃশ্য তুলে ধরেন যেখানে ঈশ্বর অর্জুন কে বলছেন হে অর্জুন তোমার মন দুর্বল হচ্ছে কারণ তুমি জানো না তুমি কে, তুমি এই শরীর থেকে ভিন্ন অজড়, অমর, অবিনাশী আত্মা। তিনি একাগ্রতার সংজ্ঞা হিসেবে বলেন যখন মন ও বুদ্ধি এক হয়ে কাজ করে তাকেই বলে একাগ্রতা। এই দ্বি দিবসীয় শিবিরের শেষ লগ্নে তিনি জানান যে বিগত ২৮ বছর থেকে ব্রহ্মাকুমারী ঈশ্বরীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি এই রাজ যোগের অভ্যাস করছেন ও সকল শ্রোতাদেরও তিনি জলপাইগুড়ি ব্রহ্মাকুমারী রাজযোগ কেন্দ্রে গিয়ে এই প্রাচীন পদ্ধতিকে জীবনে ধারন করার পরামর্শ দেন।