জলপাইগুড়ি : জলপাইগুড়ির ডাঙ্গা পাড়ার সকালটা আজ এক দুঃখের গল্প নিয়ে শুরু হল। কোতোয়ালি থানার কোনপাকরি অঞ্চলের এই গ্রামের বৃষ্টিভেজা ভুট্টা খেত থেকে বৃহস্পতিবার সকালে উদ্ধার হল নিখোঁজ এক ব্যক্তির নিথর দেহ। নাম—নেনদো মহম্মদ (৬০)।

গতকাল রাত থেকেই পরিবারে উদ্বেগের ছায়া। নেনদো বাবু সন্ধ্যার পর বাড়ি না ফিরতেই শুরু হয় খোঁজ। আতঙ্ক, দুশ্চিন্তা আর প্রার্থনায় কেটেছে একটা পুরো রাত। কিন্তু সব আশা মিলিয়ে গেল বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা নাগাদ, যখন গ্রামেরই এক ভুট্টা খেতে তার মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

গ্রামের মানুষদের মুখে উঠে এল এক চেনা সুর—“উনি তো অনেকদিন ধরেই মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন। একা একাই ঘুরে বেড়াতেন, এখানে ওখানে বসে থাকতেন।” গ্রামবাসী মোকলেশ্বর রহমানের কথাতেই স্পষ্ট, কতটা নিঃসঙ্গ ছিলেন নেনদো। চারপাশে মানুষজন থাকলেও, ভিতরে ভিতরে কতটা একা হয়ে পড়েছিলেন তিনি।
এই মৃত্যু হয়তো শোরগোল তুলবে না, কিন্তু নিখোঁজ হওয়া আর নিথর হয়ে ফিরে আসার এই গল্প মনে করিয়ে দেয়—প্রতিটি মানুষ, যত নির্জনই হোক, তার কষ্টটুকু গুরুত্ব পাওয়ার দাবিদার। মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি এই সমাজের আরও সংবেদনশীল হওয়া প্রয়োজন। হয়তো সময়মতো সহানুভূতির হাত বাড়ালে, এভাবে একটা নিঃশব্দ মৃত্যু এড়ানো যেত।
ডাঙ্গা পাড়ার আজকের সকালটা শুধু একজনের দেহ নয়, রেখে গেল এক প্রহেলিকা—আমরা কি সত্যিই দেখছি, শুনছি, বুঝছি পাশের মানুষটির ভেতরের কথা?