ডুয়ার্স, মাটিয়ালি: রবিবার রাতের নিস্তব্ধতা ভেঙে আচমকা জেগে ওঠে নেওরা মাঝিয়ালীর টুনি ধুরা এলাকা। আড়াইটা নাগাদ পাশের জঙ্গল থেকে লোকালয়ে ঢুকে পড়ে একটি বুনো হাতি। মুহূর্তেই তাণ্ডব—ভেঙে চুরমার শোবার ঘর, ছিন্নভিন্ন রান্নাঘর। নিশুতি রাতে চোখের সামনে ধ্বংস হতে থাকে নিজের সংসার, আর কোনোমতে প্রাণ বাঁচিয়ে বাইরে ছুটে আসেন বিজয় সোনারের পরিবার।

প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে চলে সেই ভয়াবহ হামলা।
হাতিটি ঘরের ভেতরে ঢুকে খুঁজে খুঁজে খেয়ে নেয় মজুত খাদ্য সামগ্রী, তছনছ করে দেয় আসবাবপত্রও। অন্ধকারে আতঙ্কে গুটিয়ে থাকা এলাকাবাসী শেষে সাহস করে একজোট হয়ে চিৎকার করতে শুরু করলে হাতিটি ধীরে ধীরে পিছু হটে ফিরে যায় জঙ্গলের দিকে।

সোমবার সকালে ঘটনাস্থলে পৌঁছান বিধাননগর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান তাজমিনারা বেগম, উপপ্রধান রতন ওরাও এবং অন্যান্য জনপ্রতিনিধিরা। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে প্রদান করা হয় খাদ্যসামগ্রী, কাপড় এবং অস্থায়ীভাবে থাকার জন্য প্লাস্টিক শিট।

তাজমিনারা বেগম বলেন, “ঘটনা সত্যিই মর্মান্তিক। আমরা চেষ্টা করছি দ্রুত পরিবারের পাশে দাঁড়াতে। বন দফতরে জানানো হয়েছে, তারা ক্ষতিপূরণ দেবে বলে আশ্বাস দিয়েছে।”
এলাকাবাসীর অভিযোগ, এই জঙ্গল ঘেঁষা অঞ্চলে হাতির উপদ্রব নতুন নয়, তবুও নেই কোনও স্থায়ী প্রতিরোধ ব্যবস্থা। শিশু থেকে প্রবীণ—প্রতিটি রাত কাটছে অনিশ্চয়তায়।
ডুয়ার্সের সবুজ বনভূমি যেমন প্রকৃতির আশীর্বাদ, তেমনি দিনে দিনে পরিণত হচ্ছে মানববসতির দুশ্চিন্তায়। আর সেই আতঙ্কেরই এক জীবন্ত উদাহরণ হয়ে থাকল টুনি ধুরার এই রাত।