ডুয়ার্স : একদিকে ঝাড়গ্রামে ট্রেনের ধাক্কায় একের পর এক তিনটি হাতির মর্মান্তিক মৃত্যু, অন্যদিকে ডুয়ার্সে এক সম্পূর্ণ বিপরীত চিত্র। চালকের দ্রুত সিদ্ধান্ত ও মানবিকতার জেরে রক্ষা পেল এক পূর্ণবয়স্ক হাতির প্রাণ। এমনই নজির গড়ল আলিপুরদুয়ার-নিউ জলপাইগুড়ি টুরিস্ট স্পেশাল ডাউন ট্রেন (১৫৭৭৮)।

ঘটনাটি ঘটেছে নাগরাকাটা থেকে চালসা যাওয়ার পথে, পিলার নম্বর ৭২/২-র কাছে। ওই এলাকায় রেলপথটি চাপরামাড়ি জঙ্গলের মধ্য দিয়ে গিয়েছে। ঠিক সেখানেই আচমকাই জঙ্গল থেকে বেরিয়ে লাইনের উপর উঠে আসে একটি পূর্ণবয়স্ক হাতি।
ট্রেন চালাচ্ছিলেন লোকো পাইলট বিশ্বজিৎ সরকার, সঙ্গে ছিলেন সহকারী চালক মোহন কুমার। তাঁরা সময়মতো হাতিটিকে দেখতে পান এবং তাৎক্ষণিকভাবে ট্রেন থামিয়ে দেন। প্রায় ১৫ মিনিটের বেশি সময় ট্রেনটি লাইনের উপর দাঁড়িয়ে ছিল, যতক্ষণ না হাতিটি নিরাপদে জঙ্গলে ফিরে যায়।
রেল দফতর এই ঘটনার ভিডিও এবং বিবরণ তাদের অফিসিয়াল সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে শেয়ার করে প্রশংসা জানিয়েছে দুই চালককে। বন দফতরের পক্ষ থেকেও তাঁদের দ্রুত সিদ্ধান্ত ও সতর্কতার ভূয়সী প্রশংসা করা হয়েছে।
বনপথের ট্র্যাকের উপর দিয়ে ট্রেন চলাচল রোজকার ঘটনা হলেও, এমন সচেতনতা এবং মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি হাতির মৃত্যু রোধে দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছে।
রেল কর্তৃপক্ষের মতে, এই ধরনের আচরণই প্রমাণ করে কীভাবে প্রযুক্তি ও সচেতনতার মেলবন্ধনে বন্যপ্রাণী সুরক্ষা সম্ভব। স্থানীয় পরিবেশপ্রেমী ও বনকর্মীরাও এই ঘটনার প্রশংসা করেছেন।
উল্লেখ্য, কিছুদিন আগেই ঝাড়গ্রামে তিনটি হাতির মৃত্যু ঘিরে রাজ্যজুড়ে তীব্র সমালোচনার ঝড় উঠেছিল। সেই পরিপ্রেক্ষিতে ডুয়ার্সের এই ঘটনা সত্যিই এক আশার আলো।