জলপাইগুড়ি : এই পৃথিবী শুধু মানুষের একাধিপত্যের জায়গা নয় — এই বার্তা আবারও মনে করিয়ে দিলেন এক পরিবেশপ্রেমী। তিস্তা নদীর বালুচরে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা সাদা ডিম থেকে কচ্ছপ ছানার জন্ম দিয়ে জীব বৈচিত্র্য রক্ষায় এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন পরিবেশ কর্মী বিশ্বজিৎ দত্ত চৌধুরি।

সম্প্রতি জলপাইগুড়ি শহরের পার্শ্ববর্তী একটি গ্রামে নদীর চরে সাদা ডিম পড়ে থাকতে দেখে এক স্থানীয় বাসিন্দা বিষয়টি জানান বিশ্বজিৎবাবুকে। দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে নদীর বালি সহ ডিমগুলি সংগ্রহ করে নিজের বাড়িতেই কচ্ছপ ছানার জন্মের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করেন তিনি।
৬৮ দিন ধরে দিনরাত যত্ন ও পর্যবেক্ষণের পর, একদিন ফুটে বেরিয়ে আসে নতুন প্রাণ— পাঁচটি কচ্ছপ ছানা। বন বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী কয়েকদিন নিজে দেখভাল করে তিনি সেই কচ্ছপদের তুলে দেন জলপাইগুড়ি বন বিভাগের হাতে।

বিশ্বজিৎবাবু বলেন, “এই কাজ আমি কোনও কৃতিত্বের জন্য করিনি। শুধু চাই— মানুষ যেন বোঝে, এই পৃথিবীর প্রতিটি প্রাণীর বাঁচার অধিকার আছে। সবাইকে অনুরোধ করব, এ ধরনের ডিম বা বাচ্চা কোথাও দেখলে নষ্ট না করে বন বিভাগ বা পরিবেশ কর্মীদের খবর দিন।”
বিশেষজ্ঞদের মতে, নদীভিত্তিক জীববৈচিত্র্য আজ সবচেয়ে বেশি হুমকির মুখে, কারণ অবৈজ্ঞানিক মাছ ধরা, নদীভাঙন রোধে বাঁধ নির্মাণ, দূষণ এবং অজ্ঞানতা।
এমন এক সময়ে বিশ্বজিৎ দত্ত চৌধুরির মতো পরিবেশপ্রেমীদের উদ্যোগ সমাজের সামনে আলো দেখায়। তাঁদের নিরলস প্রচেষ্টা ও সংবেদনশীলতাই একমাত্র পথ— এই পৃথিবীকে বাঁচিয়ে রাখার।
সচেতন হলে শুধু মানুষ নয়, রক্ষা পাবে প্রকৃতির সমস্ত প্রাণও।