জলপাইগুড়ি: চাষের জমির পাশে বাঁধা গরু, মাটির ঘরে ঝুঁকে পড়া চাল। তবু চোখে স্বপ্ন—ইঞ্জিনিয়ার হবে সে। ময়নাগুড়ির চূড়াভান্ডার গ্রামে কৃষক পরিবারের ছেলে রানা কাপুরিয়া এবারের মাধ্যমিকে নজরকাড়া সাফল্য অর্জন করে তাক লাগিয়েছে গোটা এলাকা।
৬৪০ নম্বর পেয়ে সাপটিবাড়ি ও চূড়াভান্ডার অঞ্চলে সে এখন সবচেয়ে উজ্জ্বল মুখ। বাংলায় ৮২, ইংরেজিতে ৮৭, অঙ্কে ৯১, ভৌতবিজ্ঞানে ৯৭, জীবন বিজ্ঞানে ৯৪, ইতিহাসে ৯২ ও ভূগোলে ৯৭ পেয়ে রানার কৃতিত্ব আজ এলাকার গর্ব।
তবে এই সাফল্যের পেছনে লুকিয়ে আছে অনেক ত্যাগ ও সীমাহীন লড়াই। বাবা নির্মল কাপুরিয়া একজন কৃষিজীবী। সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরানোর মতো অবস্থা। রানার মা পদ্মা কাপুরিয়া বলেন, “আমরা খুব খুশি ছেলের সাফল্যে। কিন্তু ওর স্বপ্নপূরণের পথে যে টাকাটাই সবচেয়ে বড় বাধা, সেটা বুঝতে পারছি। সরকার বা কেউ যদি সাহায্য করেন, তাহলে ছেলেটা আরও বড় কিছু করতে পারবে।”
রানাও জানায়, “আমার প্রিয় বিষয় ফিজিক্যাল সায়েন্স ও লাইফ সায়েন্স। ইঞ্জিনিয়ার হতে চাই। কিন্তু পরিবারের অবস্থা ভালো না। বাবা-মা খুব কষ্ট করে আমাকে এই পর্যন্ত নিয়ে এসেছেন। জানি না, ভবিষ্যতের স্বপ্নটা পূরণ করতে পারব কিনা।”
ছোট্ট গ্রাম থেকে উঠে আসা এই কিশোর আজ প্রমাণ করে দিয়েছে, অদম্য ইচ্ছাশক্তি থাকলে প্রতিকূলতাও থামাতে পারে না পথচলা। এখন দরকার, কেউ যেন ওর পাশে দাঁড়ায়—স্বপ্নটা যেন থেমে না যায় আর্থিক অন্ধকারে।