জলপাইগুড়ি : জলপাইগুড়ির তিস্তা নদী থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে মাছ উঠে আসছে জলের ওপরে। মঙ্গলবার সকালে এমন দৃশ্য দেখতে পেয়ে স্থানীয়দের মধ্যে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। এই ঘটনার পর থেকেই নদীতে ভিড় জমাচ্ছেন মাছ ধরতে বহু মানুষ। কিন্তু এই ঘটনাটি কি স্বাভাবিক? নাকি এর পেছনে লুকিয়ে রয়েছে কোনো গভীর রহস্য?
স্থানীয়দের অভিযোগ, কেউ নদীর জলে বিষ মিশিয়ে দিয়েছে, যার ফলে মাছ মারা যাচ্ছে। বিশেষ করে নদীর বিভিন্ন প্রজাতির দেশীয় মাছ একসঙ্গে ওপরে উঠে আসছে, যা অত্যন্ত অস্বাভাবিক ঘটনা। তবে বিষাক্ত মাছ বিক্রি বা খাওয়া নিরাপদ কি না, তা নিয়ে তৈরি হয়েছে উদ্বেগ।

তবে এই ঘটনার পেছনে কয়েকটি সম্ভাব্য কারণ থাকতে পারে: যেমন এক) শিল্পকারখানার বর্জ্য নদীতে পড়লে বা কৃষিক্ষেত্রে ব্যবহৃত কীটনাশক প্রবাহিত হয়ে নদীর জলে মিশলে মাছের ওপর বিষক্রিয়া হতে পারে। দুই) অবৈধ শিকারিরা নদীতে বিষ প্রয়োগ করলে মাছ মারা যেতে পারে। তিন) কিছু ক্ষেত্রে, নদীর জলে অক্সিজেনের মাত্রা কমে গেলে মাছ অক্সিজেন সংকটে ভেসে ওঠে এবং মারা যেতে পারে। চার) যদি কোনো কারণে তিস্তার জলপ্রবাহ হঠাৎ কমে গিয়ে পচনশীল জৈব উপাদান জমে থাকে, তাহলে মাছের অক্সিজেন সংকট দেখা দিতে পারে। পাঁচ) শীতের শেষে জলস্তরের পরিবর্তন বা হঠাৎ তাপমাত্রার ওঠানামা মাছের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। ছয়) কোনো বিশেষ ব্যাকটেরিয়া বা শৈবাল (Algae Bloom) অতিরিক্ত পরিমাণে বেড়ে গেলে মাছের মৃত্যু ঘটতে পারে।

সুতরাং, পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়া এই মাছ খাওয়া একেবারেই উচিত নয়। স্থানীয় প্রশাসন ও মৎস্য দপ্তরের উচিত জলের নমুনা সংগ্রহ করে বিশ্লেষণ করা এবং জনগণকে সতর্ক করা।
এমন পরিস্থিতিতে জলপাইগুড়ি প্রশাসন ও পরিবেশ দপ্তরের জরুরি তদন্ত প্রয়োজন।