প্রতারণার অভিযোগ : সিভিক ভলান্টিয়ার ও তাঁর স্ত্রী গ্রাহকদের টাকার বদলে মার দিলেন!

বিশ্বজিৎ নাথ : সাধারণ মানুষের সুরক্ষা দেওয়ার দায়িত্ব যাঁদের, তাঁরাই যদি আইন নিজের হাতে তুলে নেন, তাহলে ন্যায়বিচার কোথায় দাঁড়াবে? পানিহাটিতে ঘটে যাওয়া সাম্প্রতিক ঘটনা যেন সেই প্রশ্নই তুলে ধরল। ঋণের নামে ৩০ লক্ষ টাকা প্রতারণা এবং পাওনা চাইতে গেলে মহিলাদের মারধরের অভিযোগ উঠল এক সিভিক ভলান্টিয়ার ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে।

অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ারের নাম সন্তু দেবনাথ, এবং তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধেও আর্থিক প্রতারণার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কয়েকজন অসহায় মহিলা তাঁদের অসুস্থ সন্তানের চিকিৎসার জন্য আর্থিক সাহায্য চেয়েছিলেন সন্তু দেবনাথের স্ত্রীর কাছ থেকে। সন্তুর স্ত্রী তাঁদের ঋণদানকারী সংস্থা থেকে লোন করিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেন। কিন্তু লোনের টাকা ওই মহিলাদের হাতে না দিয়ে নিজেই পুরো ৩০ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেন বলে অভিযোগ।

গত ৬ ফেব্রুয়ারি, প্রতারিত ছয়জন মহিলা নিজেদের পাওনা টাকা ফেরত চাইতে গেলে রীতিমতো ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির মুখোমুখি হন। অভিযোগ, মত্ত অবস্থায় পুলিশের পোশাক পরে সন্তু দেবনাথ তাঁদের লাঠিপেটা করেন!

Fraud allegations: Civic volunteer and his wife beat customers for money!

এই ঘটনার পর আতঙ্কিত মহিলারা সরাসরি খড়দা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। দীর্ঘ তদন্তের পর শুক্রবার পুলিশ অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ার সন্তু দেবনাথকে গ্রেপ্তার করে। তবে তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়।

এই ঘটনার পর এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। স্থানীয়দের একাংশের অভিযোগ, “সাধারণ মানুষ পুলিশ বা সিভিক ভলান্টিয়ারের কাছে ন্যায়বিচার আশা করেন। কিন্তু যাঁরা নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্বে, তাঁরাই যদি দুর্নীতি আর দাদাগিরিতে মেতে ওঠেন, তাহলে আমরা কোথায় যাব?”

শুনুন বক্তব্য

অন্যদিকে, পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে,
“অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত চলছে। দোষী প্রমাণিত হলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এই ঘটনার পর প্রশ্ন উঠছে, পানিহাটি ও আশেপাশের এলাকায় এমন আরও প্রতারণার ঘটনা লুকিয়ে রয়েছে কি না? আর অভিযুক্তের স্ত্রীর বিরুদ্ধে প্রশাসন কী পদক্ষেপ নেবে? জনসাধারণ চাইছেন, শুধু গ্রেপ্তার নয়, প্রতারিতদের টাকা ফেরানোরও ব্যবস্থা করুক প্রশাসন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *