লেখক পঙ্কজ সেন
প্রতিবছর বাংলা ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ৫ ও ৬ই ফাল্গুন বা ১৮ই ফেব্রুয়ারি কোচবিহার জেলার প্রান্তিক শহর হলদিবাড়ির উপকণ্ঠে অবস্থিত মাজার শরীফে সন্ত সুফী খন্দকার মহম্মদ একরামুল হকের তিরোধান দিবসকে কেন্দ্র করে দুই দিন ব্যাপী অনুষ্ঠিত হয় হুজুর সাহেবের মেলা।

কথিত আছে, ছোটবেলা থেকেই তিনি অসীম ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন। তার ভিতরে ছিল এমন কিছু শক্তি যার ফলে তিনি অনেক অসম্ভবকে অনায়াসেই জয় করে ফেলতেন। তিনি সাবেক আসাম ও উত্তরবঙ্গের কিছু অঞ্চলে ইসলাম ধর্মের প্রচার শুরু করলে অবিলম্বে বিখ্যাত হয়ে যান, ফলে তৈরি হয়ে যায় তার কিছু একনিষ্ঠ অনুগামী। ধর্ম প্রচারের কাজে এরপর তিনি পা রাখেন হলদিবাড়িতে। ১৯৪৩ সালে এখানেই তিনি সমাধি লাভ করেন। তিরোধান দিবসকে কেন্দ্র করে যে স্মরণ সভা তা যে কখন এক বিরাট মেলায় পরিণত হল তা আজ আর হলদিবাড়ি বাসীর মনেই পড়ে না। হুজুর সাহেবের জীবনী সম্মিলিত স্মরণিকা ” নুর-এ-পয়গাম “গ্রন্থে হুজুর সাহেবের কর্মজীবন সহ তার বিভিন্ন বিষয়ের উল্লেখ আছে।

হলদিবাড়ি শহরের উপকণ্ঠে অবস্থিত হুজুরের মাজার প্রাঙ্গণের প্রায় ৩৩ বিঘা জমির উপর এই মেলার আয়োজন করা হয়। দুই দিনব্যাপী এই মেলায় উত্তরবঙ্গসহ দেশ-বিদেশের এক বিপুল পরিমাণ পুণ্যার্থী এখানে উপস্থিত হন। হুজুরের মাজারে এসে মোমবাতি ও ধুপকাঠি জ্বালিয়ে মানত করলে, ফল মিলে হাতে হাতে। এই বিশ্বাসকে সঙ্গী করে হুজুর সাহেবের বার্ষিক উৎসব একরামিয়া ঈসালে সওয়াব এ অংশ নেন হিন্দু মুসলিম নির্বিশেষে উভয় সম্প্রদায়ের অসংখ্য পুণ্যার্থী।

এই বছর ৭৯ তম (২০২৩) একরামিয়া ঈসালে সওয়াবের সূচনা করবেন কমিটির সভাপতি তথা হুজুরের বংশধর গদ্দিনশীন হুজুর খন্দকার নুরুল হক।
ছবি ইন্টারনেট
