জলপাইগুড়ি: জলপাইগুড়িবাসীর দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে যাত্রা শুরু করল জলপাইগুড়ি রোড থেকে শিয়ালদা পর্যন্ত নতুন হামসফর এক্সপ্রেস। শনিবার দুপুরে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জলপাইগুড়ির মাটি থেকে রেলপথে যাত্রা সূচনা করল এই আধুনিক এসি কোচ যুক্ত ট্রেন। শনিবার দুপুরে এক অনাড়ম্বর, আবেগঘন পরিবেশে এই ট্রেনটির শুভ সূচনা করেন জলপাইগুড়ি লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ ডাঃ জয়ন্ত কুমার রায়। তার সঙ্গে ছিলেন রেলের ডিআরএম অমরজিৎ গৌতম, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।

প্রথমবারের জন্য জলপাইগুড়ি রোড থেকে সরাসরি শিয়ালদা পৌঁছবে কোনো এক্সপ্রেস ট্রেন। ফলে একদিকে যেমন যাত্রীদের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হল, তেমনি তিস্তা পাড়ের জনজীবনে দেখা গেল খুশির ছোঁয়া। বিশেষ করে কার্তিক চন্দ্র দাসের মতো বহু যাত্রী যাঁদের গন্তব্য মুর্শিদাবাদের মতো মধ্যবর্তী স্টেশন, তাঁরা এখন থেকে সহজেই পৌঁছতে পারবেন তাঁদের গন্তব্যে।

নতুন এই হামসফর এক্সপ্রেসে থাকছে ২২টি আধুনিক এসি কোচ। প্রায় ৫৮৪ কিলোমিটার দীর্ঘ যাত্রাপথে এই ট্রেনটি ছুঁয়ে যাবে এনজেপি, কিশানগঞ্জ, মালদা, বহরমপুর কোর্ট, কৃষ্ণনগর, রানাঘাট, নৈহাটি সহ মোট ১৩টি গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন। জলপাইগুড়ি রোড থেকে রওনা দিয়ে ট্রেনটি সকালে শিয়ালদায় পৌঁছবে।

সাংসদ ডঃ জয়ন্ত কুমার রায় জানান, “উত্তরবঙ্গের সঙ্গে কলকাতার সরাসরি যোগাযোগ আরও সুদৃঢ় করতে এই ট্রেন এক বড় পদক্ষেপ। এ যেন যোগাযোগের নতুন অধ্যায়।”
এই প্রথমবার জলপাইগুড়ি রোড স্টেশন থেকে একটি ট্রেন সরাসরি শিয়ালদা যাবে। ফলে যাত্রীদের মতে, যারা এতদিন নিউ আলিপুরদুয়ার, নিউ কুচবিহার বা এনজেপি হয়ে টিকিট পেতে হিমশিম খেতেন, তাদের জন্য এই ট্রেন এক স্বস্তির দিশা।
প্রথমদিন ‘স্পেশাল’ ট্রেন হিসেবে চালু হলেও, ২০ জুন থেকে সপ্তাহে একদিন—শনিবার করে এটি পূর্ণাঙ্গ যাত্রীবাহী ট্রেন হিসেবে চলবে।
ট্রেনটির চালনা ও নিরাপত্তা ঘিরে রেলের তরফে নেওয়া হয়েছে একাধিক আধুনিক ব্যবস্থা। লোকো পাইলটের কথায়, “উদ্বোধনের দিন এই ট্রেন চালাতে পেরে গর্বিত।”
রেলের এই নতুন সংযোজন জলপাইগুড়ি ও উত্তরবঙ্গের সাধারণ যাত্রীদের জন্য এক বিশাল পাওয়া। কারণ এতদিন শিয়ালদাগামী অধিকাংশ ট্রেন নিউ আলিপুরদুয়ার বা এনজেপি থেকে ছাড়লেও, এবার জলপাইগুড়ি রোড থেকেই পাওয়া যাবে সেই সুযোগ।
ট্রেনের এক যাত্রী বিশ্বজিৎ গোস্বামী বলেন, “এই ট্রেনের দাবি আমাদের দীর্ঘদিনের ছিল। আজ এই ট্রেনে প্রথম দিনের যাত্রী হতে পেরে আমি খুশি।”
এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন—ডিআরএম অমরজিৎ গৌতম, বিজেপি জেলা সভাপতি শ্যামল সরকার, প্রাক্তন বিধায়ক মিতালী রায় সহ বহু রেলকর্মী ও যাত্রী। লোকো পাইলট থেকে শুরু করে স্থানীয় বাসিন্দা সকলেই উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন।