জলপাইগুড়ি: শহরের আলো ঝলমলে শিক্ষা পরিকাঠামোকে ছাপিয়ে তিস্তা পাড়ের কাদামাটির গ্রাম থেকে উঠে এল অনন্য এক কৃতিত্বের নাম—কোয়েল গোস্বামী। পশ্চিমবঙ্গের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় রাজ্যে সপ্তম স্থান অধিকার করে জেলা তথা গোটা উত্তরবঙ্গের মুখ উজ্জ্বল করল কচুয়া বোয়ালমারি উচ্চ বিদ্যালয়ের এই মেধাবী ছাত্রী।

পান বিক্রি করে সংসার চালানো বাবা, টিনের ছাউনি ঘর আর সীমিত সুযোগের মাঝেও কোয়েলের চোখে ছিল একটাই স্বপ্ন—উচ্চশিক্ষায় পৌঁছে নিজের পথ নিজেই গড়ে তোলা। তিস্তার স্রোতের মতো জীবন যখন টেনে নিয়ে চলেছে প্রতিকূলতার দিকে, তখন সাঁতরে উঠে এসেছে সে নিজের চেষ্টায়, নিজের বিশ্বাসে।
কোয়েল জানায়, “এই সাফল্য শুধুমাত্র আমার নয়—এটা আমার মা, বাবা আর স্কুলের সমস্ত শিক্ষকদের। ওরাই আমার শক্তি ছিলেন সবসময়।”
অভাবের ভিতর থেকেও মেয়ের জন্য স্বপ্ন দেখা ছাড়েননি বাবা। আনন্দে ভরা কণ্ঠে তিনি বললেন, “আজ খুব গর্ব হচ্ছে। আমার মেয়ে গ্রাম আর জেলার নাম একসাথে উজ্জ্বল করেছে। অনেক কিছু না পেয়েও আজ সে যেখানে পৌঁছেছে, সেটাই সবথেকে বড় পাওনা।”
স্কুলের শিক্ষক, যিনি কোয়েলের প্রতিভা গড়ে তোলার কারিগর, বললেন—”ওর মতো প্রতিভাবান ছাত্রীকে আমরা সবসময়ই উৎসাহ দিয়েছি। আজ রাজ্যে ৭ম স্থান পাওয়াটা শুধুমাত্র তার মেধা নয়, একাগ্রতা ও অধ্যবসায়েরও প্রমাণ। চাই, সমাজ ও প্রশাসন ওর উচ্চশিক্ষার পথে এগিয়ে আসুক সাহায্যের হাত বাড়িয়ে।”
তিস্তার ঢেউ পেরিয়ে কোয়েলের এই সাফল্য এখন অনেকের কাছে প্রেরণা। প্রমাণ করে দিল—গ্রামের অন্ধকারও আলোকিত হয়ে উঠতে পারে যদি ইচ্ছে থাকে আকাশ ছোঁয়ার।