সংবাদদাতা, জলপাইগুড়ি, ৯ অক্টোবর : জলপাইগুড়ি শহর সংলগ্ন বালাপাড়া সার্বজনীন দুর্গাপূজা কমিটির ঐতিহ্যবাহী মেলা এ বছর ৯৩তম বৎসর। সমস্ত রীতি ও প্রশাসনিক নিয়ম মেনেই শনিবার অনুষ্ঠিত হল মেলা। এখানকার দুর্গাপূজায় যেমন হিন্দু মুসলিম একত্রে আয়োজন করে তেমনি মেলাতেও দেখা যায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রতির দৃষ্টান্ত। বালাপাড়া যুবশক্তি সংঘ ও পাঠাগারের পরিচালনায় প্রতি বছরই মেলার আয়োজন করা হয়।

কিন্তু গত দু বছর করোনার কারণে সেভাবে মেলার প্রস্তুতি নেওয়া সম্ভব হয়নি। ঐতিহাসিক এই মেলার গুরুত্ব রয়েছে অপরিসীম। দীর্ঘদিন ধরেই দূর-দূরান্ত থেকে বহু মানুষ এই মেলায় উপস্থিত হন। এলাকার আত্মীয় স্বজনদের বাড়িতে তারা আগে থেকেই আসতে শুরু করেন এই মেলা উপভোগ করার উদ্দেশ্য নিয়ে। এবারও তার অন্যথা হচ্ছে না। পাহাড়পুর অঞ্চল অন্তর্গত বালাপাড়ায় অনুষ্ঠিত হওয়া এই মেলাটি “ভাবনা গঞ্জের” মেলা নামেও পরিচিত।

অনেকে আবার মেলাটিকে “তালতলার” মেলা বলেও জানেন। এই নামকরনের পেছনে আবার একটি বাস্তব ইতিহাসও রয়েছে। উল্লেখ্য এই এলাকায় বৃহৎ এক জোড়া তাল গাছ ছিল দীর্ঘদিন ধরে এবং সেখান থেকেই ওই নামের উৎপত্তি বলে জানান অনেকেই। ক্লাব সম্পাদক অসীম রায় বলেন, দীর্ঘ ৯৩ বছর থেকে তাদের পুজো ও মেলা হয়ে আসছে। মূলত দুর্গা পুজোকে কেন্দ্র করেই অনুষ্ঠিত হয় এই মেলা। দু’বছর করোনার প্রকোপ কাটিয়ে ফের স্বমহিমায় সাজতে শুরু করেছে এই মেলা বলে তিনি জানান। প্রশাসনিক সহযোগিতা ও সকল সদস্যের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বাস্তব রূপ পায় মেলাটি। দীর্ঘদিন থেকেই সর্ব ধর্ম নির্বিশেষে এক অপরূপ মিলনস্থলে পরিণত হয় এই মেলা বলে জানান অসীম বাবু। প্রবীণ এক বাঁশি বিক্রেতা আলম আনসারী বলেন, তিনি দীর্ঘ ৬০ বছর ধরে বাঁশি বিক্রি করছেন। তবে আগের মতো বাঁশি আর বিক্রি হয় না। তবুও তিনি সুদূর কাটিহার থেকে এই মেলায় উপস্থিত হয়েছেন বাঁশি বিক্রির উদ্দেশ্য নিয়ে।