গরমের দিনে আমের আচার মানেই স্বাদ ও সংরক্ষণের এক অসাধারণ সমাহার। আচারের ঝাঁঝালো গন্ধ, টক-মিষ্টি স্বাদ আর মশলার মেলবন্ধন মুখে আনবে জিভে জল। বাজারের আচারের চেয়ে ঘরে তৈরি আচার স্বাস্থ্যকর ও রুচিসম্মত হয়। চলুন, দেখে নিই পারফেক্ট আমের আচারের সহজ রেসিপি, সংরক্ষণের কৌশল ও কিছু প্রয়োজনীয় টিপস।
সঠিক আম নির্বাচন করা
সুস্বাদু আচার তৈরির জন্য উপযুক্ত আম নির্বাচন করা জরুরি। সবুজ ও শক্ত আম আচারের জন্য সবচেয়ে ভালো। যেমন:
✅ তোতাপুরি – টক ও শক্ত
✅ ল্যাংড়া – সামান্য মিষ্টি ও টক
✅ রাজাপুরি – তীব্র টক স্বাদের জন্য জনপ্রিয়
কাঁচা ও শক্ত আম হলে আচার দীর্ঘদিন ভালো থাকবে এবং সুন্দর টেক্সচার বজায় থাকবে।
আমের আচারের সহজ রেসিপি
প্রয়োজনীয় উপকরণ:
কাঁচা আম – ১ কেজি (কাটা)
সরিষার তেল – ২০০ মিলি
সরিষা গুঁড়া – ১০০ গ্রাম
মেথি বীজ – ৫০ গ্রাম
শুকনো মরিচ গুঁড়া – ২ টেবিল চামচ
হলুদ গুঁড়া – ২ টেবিল চামচ
লবণ – ১০০ গ্রাম (স্বাদ অনুযায়ী)
হিং – ১ চা চামচ
প্রস্তুত প্রণালী:
আম ধোয়া ও শুকানো : কাঁচা আম ভালোভাবে ধুয়ে শুকিয়ে নিন। আমের গায়ে পানি থাকলে আচার নষ্ট হতে পারে।
কাটা ও মিশ্রণ : আম ছোট ছোট টুকরো করুন। একটি বড় পাত্রে সব মশলা মিশিয়ে নিন। আম কাটার সময় সাবধান! ধারালো ছুরির প্রয়োজন, তাই সাবধানে কাজ করুন।
তেল ও সংরক্ষণ : আমের টুকরোগুলোর ওপর মশলা মিশিয়ে দিন, এরপর কাচের বয়ামে সংরক্ষণ করুন। উপরে সরিষার তেল ঢেলে দিন যেন আম সম্পূর্ণ তেলে ঢাকা থাকে।
রোদে শুকানো : আচার ৩-৭ দিন রোদে রেখে দিন। প্রতিদিন একবার নেড়ে দিন যাতে সব মশলা সমানভাবে মিশে যায়।
আচার সংরক্ষণের টিপস
✅ কাচের বা সিরামিকের বয়ামে রাখুন।
✅ রোদে শুকিয়ে সংরক্ষণ করুন, যাতে ছাঁচ না পড়ে।
✅ অতিরিক্ত তেল ব্যবহার করুন, এটি প্রাকৃতিক সংরক্ষক হিসেবে কাজ করবে।
আমের আচারের স্বাস্থ্য উপকারিতা
✔ হজমশক্তি বাড়ায় – এতে থাকা মেথি ও সরিষা হজমে সহায়ক।
✔ অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ – লবণ ও মশলা শরীরের জন্য উপকারী।
✔ বৈচিত্র্যময় খাবারের স্বাদ বৃদ্ধি করে – ভাত, পরোটা বা রুটির সাথে খাওয়ার জন্য উপযুক্ত।
শেষ কথা :
ঘরে তৈরি আমের আচার শুধু স্বাদের জন্য নয়, এটি ঐতিহ্য ও যত্নের পরিচায়ক। বাড়িতে বানালে সংরক্ষণের দুশ্চিন্তা কম থাকবে এবং মনের মতো স্বাদ তৈরি করা সম্ভব। তাই, এই রেসিপি একবার ট্রাই করুন, নিশ্চয়ই সবাই প্রশংসা করবে!
ছবি সংগৃহীত