আমিওতো রক্তমাংসের মানুষ। স্বাভাবিকভাবেই এই ধরনের বৈষম্য বা ষড়যন্ত্রের শিকার যদি হতে হয় তবে কাজের প্রতি উৎসাহ হারিয়ে যায় – কাউন্সিলর তপন ব্যানার্জী।
নিজস্ব সংবাদদাতা, জলপাইগুড়ি, ৩১ মে ২০২২ : জলপাইগুড়ি পুরসভার পূর্ণাঙ্গ বোর্ড গঠন হয়েছে সোমবার। চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিলে স্থান পেয়েছেন সন্দীপ মাহাতো, লোপামুদ্রা অধিকারী ও স্বরূপ মন্ডল। কিন্তু সকলকে অবাক করে দিয়ে সিআইসি’তেও জায়গা পেলেন না ১৫ নং ওয়ার্ডের পাঁচ বারের অভিজ্ঞ কাউন্সিলর তথা শহর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস কমিটির সভাপতি তপন ব্যানার্জী। ঘটনায় তিনি খুবই মানসিক আঘাত পেয়েছেন। ভীষণভাবে ভেঙে পড়েছেন। তাই সিআইসি ঘোষণার অনুষ্ঠানেও দেখা যায় নি তাকে। সোমবার রাতে নিজের বাড়িতে অনুগামীদের ভিড়ে সাফ জানিয়ে দিলেন মূখ্যমন্ত্রীর কাছে এ বিষয়ে নালিশ জানাবেন। সাথে যাবেন তার অনুগামীরা।
সংবাদ মাধ্যমের কাছে ক্ষোভ উগড়ে দেওয়ার পরেও তিনি থেমে না থেকে এবার মূখ্যমন্ত্রীর কাছে পুরো বিষয়টি জানাবেন তপন বাবু। সোমবার রাতে তপন ব্যানার্জীর বাসভবনে অসংখ্য তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীদের ভিড় দেখা যায়। তপন বাবু পুরসভার চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিলে জায়গা না পাওয়ায় বিষয়ে বলেন, হয়তো যারা বোর্ড তৈরি করেছে তারা আমাকে যোগ্য মনে করেনি। যাদেরকে নিয়েছে তাদের যোগ্যতা হয়তো আমার থেকে বেশি তাই আমাকে বাদ দিয়েছে। অভিমানের সুরে তিনি বলেন, দলে যদি সঠিক মূল্যায়ন না হয় সেই দলের খুব বেশি শ্রীবৃদ্ধি সম্ভব হয়না। আমাদের দল ফলাফল ভিত্তিক দল, আমরা যদি রেজাল্ট দিতে না পারি তবে দলে বা পদে থাকার কোন অধিকার থাকে না। কিন্তু এ পর্যন্ত দল আমাকে যে দায়িত্ব দিয়েছে তা আমি নিষ্ঠা ও সততার সঙ্গে পালন করেছি। কিন্তু আজকে মনে হচ্ছে সততা আর নিষ্ঠার কোন মূল্য নেই। যারা দলবাজি করতে পারবে, যারা পুরসভাকে নিজেদের ব্যবসার কাজে লাগাতে পারবে তারাই হয়তো আজকে প্রতিষ্ঠিত হবে এবং তাদের কথাই প্রাধান্য পাবে। সিআইসি’র নাম ঘোষণা প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, এটা আমাদের সাথে কোনো পরামর্শ ছাড়াই, আমাদেরকে না জানিয়েই একপ্রকার ঘোষণা করার প্রস্তুতি শুরু করে দল। এটাই চরম দুর্ভাগ্যজনক। এটা হচ্ছে চরম দলবাজি, ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র এবং যাতে কোন ভাল মানুষ বোর্ডে প্রবেশ করতে না পারে সেটার যথাসাধ্য চেষ্টা করা। আর সেটাই করে গেছে। তবে মানুষ এর যোগ্য জবাব দেবে। আগামী দিনে মানুষই বলবে এটা ঠিক হয়েছে না ভুল হয়েছে। তপন বাবু বলেন, আমার অভিজ্ঞতাকে তো পুরসভা কাজে লাগাতে পারলো না। ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হিসেবে পুরসভাতে যাব, তবে যদি কোন কাজে পরামর্শ চায় অবশ্যই পরামর্শ দেব। ভগ্নহৃদয়ে তপন বাবু বলেন, আমিওতো রক্তমাংসের মানুষ। স্বাভাবিকভাবেই এই ধরনের বৈষম্য বা ষড়যন্ত্রের শিকার যদি হতে হয় তবে কাজের প্রতি উৎসাহ হারিয়ে যায়। আর সেটাই হচ্ছে। তবে এবার পুরো বিষয়টি মূখ্যমন্ত্রীর কাছে জানাবেন বলেও তিনি জানিয়েছেন।