জলপাইগুড়ি: পোকা-সহ আইসক্রিম বিক্রির অভিযোগে অবশেষে বন্ধ করে দেওয়া হল জলপাইগুড়ি শহর সংলগ্ন ফোল্ডিং মোড়ের একটি আইসক্রিম কারখানা। সোমবার সকালে জেলা খাদ্য সুরক্ষা দফতর এবং বিকেলে সদর ব্লকের বিডিও মিহির কর্মকার নিজে অভিযুক্ত কারখানায় উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন। এরপর কারখানার মালিকের উপস্থিতিতে কারখানাটি বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়।
বিডিও মিহির কর্মকার বলেন, “কারখানায় আইসক্রিম তৈরির নানা পর্যায়ে গলদ নজরে এসেছে। মানুষের স্বাস্থ্য নিয়ে কোনওরকম অবহেলা বরদাস্ত করা হবে না। আপাতত কারখানা বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং এ সংক্রান্ত রিপোর্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।”
সোমবার অভিযানের সময় প্রায় ৭০-৮০ কেজি নিম্নমানের আইসক্রিম এবং বিভিন্ন প্যাকেটজাত পানীয় নষ্ট করে দেওয়া হয়। কারখানায় ব্যবহৃত বরফ, ফ্লেভার ও রং-এর মান নিয়ে তৎক্ষণাৎ সন্দেহ প্রকাশ করেন প্রশাসনের আধিকারিকরা। পরীক্ষায় স্পষ্ট হয়, অনেক ক্ষেত্রে মেয়াদ উত্তীর্ণ ও দুর্গন্ধযুক্ত উপাদান ব্যবহার করা হচ্ছিল।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, রবিবার একটি শিশু আইসক্রিমে পোকা দেখতে পায়। তারপরই বিষয়টি জানাজানি হয় এবং প্রতিবাদের মুখে পড়ে কারখানা কর্তৃপক্ষ।
কারখানার মালিক হরিপদ রায় দাবি করেন, “আমরা নিম্নমানের কিছু ব্যবহার করিনি। তবে এবার থেকে প্রশাসনের সব নির্দেশ মেনে চলব।”
অভিযান চলাকালীন দেখা যায়, কারখানায় পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা নেই, ঠান্ডা পানীয় চুবানো রয়েছে ময়লা পানিতে, যেখানে মরা পোকা ভেসে রয়েছে। এছাড়া প্যাকেটজাতকরণের প্রক্রিয়াতেও ছিল চরম অনিয়ম। এই সমস্ত নমুনা সংগ্রহ করে পাঠানো হচ্ছে সেন্ট্রাল ল্যাবে পরীক্ষার জন্য।
প্রশাসনের কড়া অবস্থানে স্বস্তি ফিরে এসেছে স্থানীয়দের মধ্যে। জলপাইগুড়ি সদরের বিডিওর স্পষ্ট বার্তা, “জনস্বাস্থ্যের প্রশ্নে কোনও গাফিলতি বরদাস্ত করা হবে না।”