সংবাদদাতা, জলপাইগুড়ি, ১৯ নভেম্বর’২৩ : প্রচলিত কাহিনী অনুযায়ী জানা যায় যে ছটপুজার সূচনা হয় মহাভারত থেকে। সূর্য পুত্র কর্ণই সূর্যোদয়ে সূর্যের পূজা শুরু করেন। তিনি ভগবান সূর্যের সবোর্চ্চ ভক্ত ছিলেন। রবিবার বিকেলে জলপাইগুড়ি শহরে উৎসাহ উদ্দিপনার মধ্য দিয়ে বিভিন্ন ছট পুজোর ঘাটগুলিতে পুজা শুরু হল।

সোমবার সকালে শেষ হবে ঘাটের পুজোপাঠ। এদিন ছট ব্রতীদের গন্ডি কেটে ঘাটে যাওয়ার দৃশ্য দেখতে পাওয়া যায়। উল্লেখ্য কার্তিক মাসের শুক্লা পক্ষের ষষ্ঠী তিথিতে ছটপুজার ব্রত পালন করা হয়। সূর্যদেব ও তার স্ত্রী ঊষাকে আরাধনার মাধ্যমে এই পূজা করেন। কার্তিক শুক্লা চতুর্থী থেকে কার্তিক শুক্লা সপ্তমী অবধি চারদিন ধরে নির্জলা উপোসের মধ্য দিয়ে ছটপুজা করা হয়। নিয়মরীতি অনুযায়ী ব্রতের প্রথম দিন ব্রতীর ঘরবাড়ী পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করে স্নান করে নিরামিষ খাওয়া দাওয়া করতে হয়।

দ্বিতীয় দিন থেকে উপবাস শুরু হয়। দিনভর নির্জলা উপবাস পালনের মাধ্যমে ব্রতী সন্ধ্যায় পূজার শেষে ক্ষীর ভোগ খাওয়া দাওয়া করেন। এটা খরনা বলা হয়। তৃতীয় দিন অর্থাৎ আজ রবিবার নদীর ঘাটে গিয়ে অস্তগামী সূর্যকে দূধ অর্পণ করেন ব্রতীরা। এছাড়াও ব্রতের শেষদিন পুনরায় ঘাটে গিয়ে উদীয়মান সূর্যকে পবিত্র চিত্তে অর্ঘ্য প্রদানের পর উপবাস ভঙ্গ করা হয়। পূজার প্রসাদ ক্ষীর, ঠেকুয়া, আখ, কলা, নারকেল মিষ্টি।

এদিন কিংসাহেব ঘাটে বিকেলে করলা নদীর জলে নেমে অস্ত যাওয়া সূর্যকে পবিত্র চিত্তে অর্ঘ্য প্রদান করেন। এবং ছট মাতার কাছে সংসারে সুখ শান্তি কামনা করেন ছটপুজোর ব্রতীরা। উল্লেখ্য জলপাইগুড়ি শহরে কিংসাহেবের ঘাট,তিস্তা ঘাট, মাসকালাইবাড়ি ঘাট, বাবুঘাট, স্পোর্টস কমপ্লেক্স সংলগ্ন করলা নদীর ছটঘাট সহ শহরের সমস্ত ঘাট গুলিই শনিবার থেকে সেজে উঠেছিল। জলপাইগুড়ির সবচেয়ে বড়ো ঘাট কিংসাহেবের ঘাটেও ছটপুজার ঘাট পরিচালনা করে জলপাইগুড়ি পুরসভা।

এদিনের ছটঘাটের ও মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জলপাইগুড়ি পৌরসভার চেয়ারম্যান পাপিয়া পাল, ভাইস চেয়ারম্যান সৈকত চাট্যাজি, সদর মহকুমা শাসক তমোজিৎ চক্রবর্তী, জলপাইগুড়ির বিধায়ক প্রদীপ কুমার বর্মা, জেলাপরিষদের সভাধিপতি কৃষ্ণা রায় বর্মন, চেয়ারম্যান ইন -কাউন্সিলগন, পুর আধিকারিকেরা ও কাউন্সিলরা সহ অন্যান্য আধিকারিক বৃন্দরা। এদিন কিংসাহেবের ঘাটে দর্শনার্থীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো।