নিজস্ব সংবাদদাতা, জলপাইগুড়ি, ১৬ এপ্রিল ২০২২ : ময়নাগুড়ির বাগান বাড়িতে ধর্ষনের চেষ্টা এবং পরবর্তীতে নির্যাতিতাকে প্রাণে মারার হুমকি, যার কারণে গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা নির্যাতিতার। ইতিমধ্যে এই ঘটনা রাজ্যের অন্যান্য এলাকার নারী নির্যাতনের ঘটনা গুলোর মতোই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।

শনিবার ময়নাগুড়ির জোরপাকড়িতে ওই কিশোরীর বাড়িতে যান জলপাইগুড়ি লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ ডা: জয়ন্ত কুমার রায়। পরিবার ও এলাকার বাসিন্দাদের সাথে কথা বলেন তিনি।

সাংসদ এদিন বলেন, ময়নাগুড়িতে কিশোরী অগ্নিদগ্ধ হওয়ার ঘটনা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। কিশোরীর শরীরের শতকরা ৬৫ শতাংশ পুড়ে গিয়েছে। কিশোরীকে আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ সাংসদের। এর উপযুক্ত বিচার আমরা চাই। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। পাশাপাশি আমরা ওই নির্যাতিতা কিশোরীর পরিবারের পাশে রয়েছি বলেও জানান সাংসদ।

অন্যদিকে এদিন সাংসদ ও বিজেপি নেতৃত্বের ভূমিকা নিয়ে তীব্র কটাক্ষ ছুঁড়ে দেন তৃণমূল নেতা সৌরভ চক্রবর্তী। সৌরভ চক্রবর্তী বলেন, বিজেপি নেতারা যে বক্তব্য রাখছেন, দেখে মনে হচ্ছে ওনারা সবকিছু জানেন। সর্বজ্ঞানী, জ্ঞানপাপী। কোন ঘটনা ঘটে থাকলে পুলিশ আছে পুলিশ দেখবে। আমরা এই ধরনের ঘটনা সমর্থন করি না। আর এখন রাজনীতি করা উচিত নয়। মেয়েটির যাতে ট্রিটমেন্ট ভালো হয় সেটাই দেখা আমাদের কর্তব্য। সাংসদ (ডাঃ জয়ন্ত কুমার রায়) তিন বছরে ২৪ কোটি টাকা পেয়েছেন, এক জায়গায় একটাও কি ইট গেঁথেছেন। তিনি কি করলেন – প্রশ্ন সৌরভ বাবুর। ময়নাগুড়ির ঘটনা নিয়ে পুলিশ তদন্ত করছে বলেও জানান তিনি।

পাশাপাশি ময়নাগুড়ির ঘটনার সাথে রাজ্য জুড়ে নারী নির্যাতন ও ধর্ষণের ঘটনা প্রতিদিন বাড়ছে। এই প্রতিবাদে জলপাইগুড়ি জেলা সারা ভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতি সদর পূর্ব এরিয়া কমিটি আন্দোলনে নামলো। শনিবার শহরের থানা মোড়ে মহিলারা একজোট হয়ে রাস্তা প্রতীকী রাস্তা অবরোধে সামিল হল। রাস্তা অবরোধ করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করার দাবি তোলা হয়েছে। সমিতির অভিযোগ, চলতি বছর ৩ মার্চ থেকে ১০ এপ্রিল পর্যন্ত রাজ্য ১৫জন নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্তরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে তৃণমূলের স্থানীয় নেতা ও কর্মী। এই কারণে ছাড় পাচ্ছেন অনেকে বলে অভিযোগ। তবে সব কটি ধর্ষণের ঘটনাকে ছাপিয়ে গিয়েছে হাঁসখালির ঘটনা।

নাবালিকাকে গণ ধর্ষণ করা হয়, এরপর ওই নাবালিকার মৃত্যু হলে দেহ পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তির দাবি তোলা হয়েছে এদিনের কর্মসূচি থেকে বলে জানালেন সমিতির জেলা সম্পাদিকা রীনা সরকার।