জলপাইগুড়ি : পুরনোকে বিদায় জানিয়ে নতুনকে বরণ করার দিন আজ। আর সেই শুভ লগ্নে সকাল থেকেই জলপাইগুড়ির যোগমায়া কালী মন্দিরে ঢল নেমেছে ভক্তদের। পয়লা বৈশাখ মানেই শুধু ক্যালেন্ডারের পাতা বদল নয়—এ যেন এক নতুন আশার আলো, সুখ-সমৃদ্ধির প্রার্থনা আর ভক্তির নিঃশব্দ স্পর্শ।
মঙ্গলবার ভোরের আলো ফোটার আগেই শহরের ডিবিসি রোড সংলগ্ন এই ঐতিহ্যবাহী মন্দিরে ভক্তদের লম্বা লাইন। কেউ হাতে ফুল-ডালা, কেউ আবার নারকেল, মিষ্টি বা ধূপকাঠি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন ঠাকুরের দরবারে প্রণতি জানাতে। বছরের প্রথম দিনে ‘শুভ হোক শুরু’—এই কামনায় মুখর সকলের মুখ। এ যেন বিশ্বাস আর ভক্তির মিলনমেলা।
যোগমায়া কালীবাড়ির পুরোহিত জনার্দন চক্রবর্তী জানালেন, “এই দিনটিতে শুধুমাত্র ব্যক্তিগত নয়, সমাজের সার্বিক মঙ্গল কামনাই করেন ভক্তরা। সকলে চান যেন ভালো থাকে দেশ, ভালো থাকে মানুষ।”
ভক্ত শমিষ্ঠা মজুমদারের চোখে জল, তবু মুখে আশার হাসি—“এই মন্দিরে প্রতি নববর্ষেই আসি। মনে হয় মা আশীর্বাদ করছেন নতুন বছরটা সুন্দর কাটুক।”
গৃহবধূ অপরূপা চাকী বললেন, “আজকের দিনটা শুধু পুজো নয়, আত্মবিশ্বাস ফিরে পাওয়ার দিন। মনে হয় নতুন করে শুরু করতে পারব।”
মন্দিরের আর এক পুরোহিত বাদল আচার্য জানালেন, “এই দিনটায় গনেশ পুজোর রেওয়াজ বহু পুরোনো। নতুন বছরের প্রথম দিনে তাঁর আশীর্বাদ নেওয়া অতি প্রয়োজনীয়।”
মন্দির প্রাঙ্গণে ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে ভোগ-প্রসাদের আয়োজন। ধূপ-ধুনো আর মন্ত্রোচ্চারণে বাতাসে মিশে আছে ভক্তির সুর। স্থানীয় দোকানগুলিতেও শুরু হয়ে গেছে গনেশ পুজো—ব্যবসার শুভ সূচনা আর সাফল্যের প্রত্যাশায়।
১৪৩১-কে বিদায় জানিয়ে বাংলা পা দিল ১৪৩২ তে। আর তারই সূচনায় জলপাইগুড়ি জুড়ে যেন উৎসবের ছোঁয়া। শুধুই আচার-অনুষ্ঠান নয়, এ যেন এক আত্মিক অনুভব, সংস্কৃতির গভীর মমতা, আর নতুন আশার আলোকবর্তিকা।