JALPAIGURI BJP : জেলা সভাপতি বদলালেও কি বদলাবে দলের অভ্যন্তরীণ সমীকরণ?

জলপাইগুড়ি : জলপাইগুড়ি জেলা বিজেপির নতুন সভাপতি শ্যামল রায় দায়িত্ব নেওয়ার পর সোমবার দলীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবর্ধনা সভায় বিপুল উচ্ছ্বাসের চিত্র দেখা গেল। দলের নেতা-কর্মীদের ভিড়ে কার্যত হলঘর উপচে পড়ার উপক্রম। কিন্তু এই উৎসবের মাঝেও রাজনৈতিক মহলের নজর কেড়েছে একাধিক দিক— বিশেষ করে দলের অভ্যন্তরীণ সমীকরণ।

অনুষ্ঠানে দলের প্রাক্তন সহ-সভাপতি ও বিক্ষুব্ধ নেতা অলোক চক্রবর্তীকে দেখা গেল ফুল হাতে অপেক্ষা করতে। একসময় যিনি শ্যামল রায়কে প্রকাশ্যে কটাক্ষ করেছিলেন, তিনিই এবার সৌজন্য দেখিয়ে নতুন সভাপতিকে সংবর্ধনা দিলেন। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে অলোকবাবু বলেন, “একজন বিজেপি কর্মী হিসেবে নতুন সভাপতিকে শুভেচ্ছা জানানো আমার কর্তব্য। তাই এসেছি।”

অন্যদিকে, শ্যামল রায় এই প্রসঙ্গে কৌশলী উত্তর দিয়ে বলেন, “আমাদের সভায় আপামর জলপাইগুড়িবাসী এসেছে। এখানে অনেকেই এসেছে, তবে ব্যক্তিগতভাবে কারও সঙ্গে বিশেষ কথা হয়নি।”

সভায় আরেকটি তাৎপর্যপূর্ণ দৃশ্য ছিল— প্রাক্তন সভাপতি বাপি গোস্বামীর নিরব কিন্তু সক্রিয় উপস্থিতি। যদিও নতুন সভাপতিকে স্বাগত জানাতে দলের পুরনো অনেকেই হাজির ছিলেন, কিন্তু বাপির সঙ্গে তাঁদের কথাবার্তা ছিল নগণ্য। তবে তিনি যথারীতি ব্লকস্তরের নেতা-কর্মীদের সংগঠন পরিচালনার নির্দেশ দিতে ব্যস্ত ছিলেন।

রাজনৈতিক মহলে জল্পনা চলছে, সভাপতির পদে পরিবর্তন এলেও জেলা বিজেপির প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ কি এখনও বাপির হাতেই থাকবে? অনেকেই মনে করছেন, শ্যামল রায় সভাপতি হলেও বকলমে দল চালাবেন বাপি গোস্বামী।

দলের একাংশের দীর্ঘদিনের ক্ষোভ ছিল, পুরনো কর্মীদের যথাযথ সম্মান দেওয়া হয় না। এই কারণে অনেকেই দল থেকে দূরত্ব তৈরি করেছিলেন। এবার সভাপতি বদল ঘটলেও সেই সংস্কৃতি পরিবর্তন হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।

এক কর্মী ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেন, “প্রেসিডেন্ট বদলালেও যদি সংগঠন চালানোর পদ্ধতি না বদলায়, তাহলে এতে লাভ কী?”

দলের অভ্যন্তরে এই সমীকরণ আগামী দিনে জলপাইগুড়ি বিজেপির ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে। আপাতত, নতুন সভাপতির সংবর্ধনার উচ্ছ্বাসের মধ্যেই দানা বাঁধছে দলের ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা নিয়ে নানা প্রশ্ন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *