দম্পতিকে আত্মহত্যায় ‘প্ররোচনা’ : জলপাইগুড়ি জেলা আদালতে সৈকত চ্যাটার্জী

সংবাদদাতা, জলপাইগুড়ি, ১৬ অক্টোবর’২৩ : প্রায় চার মাস পর দেখা পাওয়া গেল জলপাইগুড়ি পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান তথা জেলা যুব তৃণমূলের সভাপতি সৈকত চ্যাটার্জীর। আজ সোমবার তাকে দেখা গেল জলপাইগুড়ি জেলা ও দায়রা আদালতে।

আদালত চত্বরে সৈকতকে দেখা যেতেই শুরু হয় জল্পনা। উল্লেখ্য, এ বছরের 1 এপ্রিল পান্ডা পাড়ার বাড়িতে আত্মহত্যা করেন জলপাইগুড়ি পুরসভার প্রাক্তন উপ পুরমাতা অপর্ণা ভট্টাচার্য এবং তার আইনজীবী স্বামী তথা জেলা শিশুকল্যাণ সমিতির প্রাক্তন সদস্য সুবোধ ভট্টাচার্য।

এই দম্পতির ঘর থেকে পুলিশ একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করে। তাতে পুরসভার বর্তমান উপ পুরপিতা সৈকত চ্যাটার্জী, কাউন্সিলর সন্দীপ ঘোষ সহ চারজনের বিরুদ্ধে টাকা তোলা, হুমকি দেওয়া, শিশু পাচারে যুক্ত থাকার অভিযোগ তুলে তাঁদের কারণেই মৃত্যুর পথ নিতে হয়েছে বলে অভিযোগ তোলা হয়।

ঘটনায় সৈকত সহ চারজনের বিরুদ্ধে মৃত সুবোধ ভট্টাচার্যের দিদি ডাবগ্রাম ফুলবাড়ীর বিজেপি বিধায়ক শিখা ভট্টাচার্য কোতয়ালী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এরপর বাকি তিনজন অভিযুক্ত আদালতে আত্মসমর্পণ করে। অন্যদিকে সৈকত চ্যাটার্জী উক্ত দম্পতির আত্মহত্যায় প্ররোচনা মামলায় আগাম জামিনের আবেদন করে হাইকোর্টে। কিন্তু 16 জুন সেই মামলার রায়ে হাইকোর্ট সৈকতের জামিন খারিজ করে দেয়। হাইকোর্টে আগাম জামিন খারিজ হতেই উধাও হয়ে যায় সৈকত।

Jalpaiguri District Court saikot

পুলিশ সৈকতের বাড়ি গেলেও তার খোঁজ পাওয়া যায় নি। হাইকোর্টের রায়ের প্রেক্ষিতে রক্ষাকবচ চেয়ে সৈকত সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টও এমাসে সৈকতের আগাম জামিনের আবেদন খারিজ করে দেয় এবং সৈকতকে আগামী ২৬ অক্টোবরের মধ্যে জেলা আদালতে হাজির হয়ে তার বক্তব্য পেশ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আর আজ সপ্তাহের প্রথম কাজের দিনই সৈকতকে দেখা গেল জেলা আদালতে।

সৈকত চ্যাটার্জীর আবেদন শুনলই না জলপাইগুড়ির জেলা জজ অরুণকিরণ বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার জলপাইগুড়ি জেলা আদালতে এসেছিলেন দম্পতিকে আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়ায় অভিযুক্ত জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি সৈকত চ্যাটার্জী।

এ দিন সকালে প্রথমে তিনি জেলা জজের এজলাশে হাজির হন। জেলা জজের কাছে তিনি আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তিনি উপস্থিত হয়েছেন এবং তদন্তে সহযোগিতা করবেন।

জেলা জজ জানিয়ে দেন এই মামলা শোনার এক্তিয়ার তাঁর নেই। সিজেএম আদালতে হাজিরা দিতে বলেন। সৈকতের বার বার আবেদনও শোনেননি জেলা জজ। সিজেএম আদালত আগেই সৈকতের নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিল।

Leave a reply

  • Default Comments (0)
  • Facebook Comments

Your email address will not be published. Required fields are marked *