পহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের উপর নির্মম জঙ্গি হামলায় প্রতিবাদে একসুরে জলপাইগুড়ি (ভিডিও সহ)

বার অ্যাসোসিয়েশন থেকে শুরু করে বাজারের দোকানদার, রাজনৈতিক মিছিল থেকে নাগরিক শোক—উপচে পড়ল একাত্মতা ও প্রতিবাদের আবেগ

জলপাইগুড়ি : কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের উপর নির্মম জঙ্গি হামলায় স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে গোটা দেশ। নিরস্ত্র সাধারণ পর্যটকদের রক্তে রঞ্জিত হওয়া পাহাড়ের সেই নির্জনতা রাগে ও শোকে রূপ নিয়েছে পথে, প্রতিবাদে, নীরবতাতেও। তারই প্রগাঢ় প্রতিফলন ঘটল জলপাইগুড়ি শহরে।

সন্ত্রাসের কালো ছায়ার বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সরব হলেন জলপাইগুড়ি বার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা। সোমবার, আদালতের লাইব্রেরি প্রাঙ্গণে দাঁড়িয়ে মৌন মিছিল, কালো ব্যাজ ও এক মিনিটের নীরবতা পালনের মাধ্যমে শ্রদ্ধা জানানো হয় নিহতদের। অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক অভিজিৎ সরকার বলেন, “কাশ্মীরের মাটি জুড়ে রক্ত বইছে পর্যটকদের। এই নির্মমতার বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিবাদ একান্ত জরুরি।”

শুধু আইনজীবীরাই নন, একযোগে পথে নামলেন জলপাইগুড়ির ব্যবসায়ীরাও। রাত ঠিক আটটা। হঠাৎই নিভে গেল মার্চেন্ট রোডের দোকানগুলোর আলো। জ্বলে উঠল মোমবাতি।

এক মিনিটের শোক নীরবতায় স্তব্ধ হয়ে গেল বাজারের কোলাহল। কালো ব্যাজ পরে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে রইলেন দোকানদাররা। জলপাইগুড়ি মার্চেন্ট রোড ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির পক্ষ থেকে জানানো হয়, “আজ আমরা কেবল ব্যবসায়ী নই, আমরা শোকস্তব্ধ এক নাগরিক সমাজ।”

অন্যদিকে, অভয়া চত্বরে আয়োজিত হয় নাগরিক শোকসভার। উপস্থিত ছিলেন জলপাইগুড়ি সংসদের সভাপতি পান্থ দাশগুপ্ত, কনভেনার ভারগবী হোম রায় সহ বিশিষ্টরা।

আলো নিভিয়ে, মোমবাতি হাতে, নীরবতায় তারা স্মরণ করেন অকালপ্রয়াত সেই পর্যটকদের, যাঁরা শুধুমাত্র প্রকৃতির সৌন্দর্য দেখতে গিয়ে সন্ত্রাসের নির্মম শিকার হয়েছেন।

সেইসঙ্গে, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামল বামফ্রন্ট। সিপিআই (এম)-এর নেতৃত্বে আয়োজিত প্রতিবাদ মিছিলে স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে জলপাইগুড়ি শহর।

নেতৃত্বে ছিলেন রাজ্য ও জেলা স্তরের নেতৃবৃন্দ। কামারপাড়া থেকে কদমতলা, মার্চেন্ট রোড ঘুরে ফিরে এলেন জেলা পার্টি দপ্তরে—হাতে ছিল প্রতিবাদী প্ল্যাকার্ড, গলায় ছিল মানবিকতা।

একটি ভয়ংকর রাতের প্রেক্ষিতে, জলপাইগুড়ি প্রমাণ করে দিল—যেখানে মানুষের রক্ত ঝরে, সেখানে প্রতিবাদ নিঃশব্দ থাকে না। এখানেও আলো জ্বলে মোমবাতিতে, প্রতিবাদ ধ্বনিত হয় নীরবতায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *