চা বাগান শ্রমিকদের জমির পাট্টার দাবিতে উত্তাল জলপাইগুড়ি; আন্দোলনে প্রোগ্রেসিভ টি ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন

জলপাইগুড়ি : নিজেদের বসবাসের জমির পাট্টার দাবিতে বৃহত্তর আন্দোলনে নামল আদিবাসী বিকাশ পরিষদ সমর্থিত প্রোগ্রেসিভ টি ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন। বৃহস্পতিবার জলপাইগুড়ির টাউন ক্লাব সংলগ্ন এলাকায় শ্রমিকরা জড়ো হয়ে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন এবং পরে জেলাশাসকের দপ্তরের সামনে বিক্ষোভে সামিল হন।

প্রশাসনের পক্ষ থেকে জেলাশাসকের মূল গেটের সামনে আন্দোলনকারীদের আটকে দেওয়া হয়, কিন্তু তাতেও আন্দোলন থামেনি। ইউনিয়নের প্রতিনিধি দল পরে ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দপ্তরের আধিকারিকের হাতে দাবিপত্র তুলে দেন।

শ্রমিকদের দাবি কী?

১️. শ্রমিকদের বসবাস ও কৃষিকাজের জমির পাট্টা:
১৫০-২০০ বছর ধরে চা বাগান এলাকায় শ্রমিকরা বসবাস ও কৃষিকাজ করে আসছেন। কিন্তু রাজ্য সরকার তাঁদের মাত্র ৫ ডেসিমেল করে জমির পাট্টা দিচ্ছে, যা একেবারেই পর্যাপ্ত নয়। শ্রমিকদের দাবি, যার যতটুকু জমি রয়েছে, সেই পরিমাণ জমির পাট্টা দেওয়া হোক।

২️. টি-ট্যুরিজম প্রকল্প নিয়ে অনিশ্চয়তা : রাজ্য সরকার ২০২৩ সালে এক নোটিফিকেশনে ঘোষণা করেছে যে চা বাগানের ৩০ শতাংশ জমিতে টি-ট্যুরিজম হবে। কিন্তু এতে শ্রমিকদের কী ভবিষ্যৎ? তাঁরা কি এই প্রকল্পে কাজ পাবেন? এই বিষয়টি এখনও পরিষ্কার নয়, যা নিয়ে শ্রমিকদের মধ্যে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে।

৩️. ন্যূনতম মজুরির দাবি: চা বাগান শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি এখনও নিশ্চিত করা হয়নি। দীর্ঘদিন ধরে অধিক পরিশ্রমের বিনিময়ে তাঁরা ন্যায্য মজুরি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

প্রোগ্রেসিভ টি ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সেন্ট্রাল কমিটির সম্পাদক বাবলু মাঝি বলেন,
“সরকার চা বাগানের জমি বিভিন্ন বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহার করতে চাইছে, কিন্তু সেখানে বসবাসকারী শ্রমিকদের ভবিষ্যৎ কী হবে, তা নিয়ে নিশ্চয়তা দিচ্ছে না। আমাদের দাবি, যতটুকু জমি শ্রমিকরা ব্যবহার করছেন, ততটুকু জমির পাট্টা দেওয়া হোক, নইলে এই আন্দোলন আরও বৃহত্তর হবে।”

এই আন্দোলন চা বাগান শ্রমিকদের অধিকার রক্ষার লড়াইকে নতুন মাত্রা দিয়েছে। রাজ্য সরকার কী সিদ্ধান্ত নেয়, তা এখন সকলের নজরে। কিন্তু শ্রমিকদের দাবি না মানা হলে আন্দোলন যে আরও তীব্র হবে, তা আন্দোলনকারীদের বক্তব্য থেকেই স্পষ্ট।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *