জলপাইগুড়ি: মাতৃত্বের অনুভূতি পাওয়ার স্বপ্ন পূরণ হলো ইউলেন্ডা বকেটের। একবছর তিন মাস আগে হাসপাতালের বেডে ফেলে যাওয়া ছোট্ট তিন্নি নতুন জীবনের সন্ধান পেল সুদূর স্পেন থেকে আসা এক মায়ের কোলে। ৪৩ বছরের ইউলেন্ডা, যিনি একজন অর্থনীতির অধ্যাপিকা, বহুদিন ধরেই মা হতে চেয়েছিলেন। তবে তিনি চেয়েছিলেন এমন একটি শিশুকে গ্রহণ করতে, যে প্রকৃত মায়ের স্নেহ থেকে বঞ্চিত।
এই স্বপ্ন বাস্তবায়িত করতে ইউলেন্ডা যোগাযোগ করেন আফা (অথরাইজড ফরেন অ্যাডপটেশন এজেন্সি) এবং কারা (সেন্ট্রাল অ্যাডপশন রিসোর্স অথরিটি)-র মাধ্যমে জলপাইগুড়ি গভর্নমেন্ট স্পন্সরড স্পেশালাইজড অ্যাডপশন এজেন্সি-র সঙ্গে। সেখানেই তিনি খুঁজে পান ছোট্ট তিন্নিকে, যে তখনও মায়ের স্নেহের অপেক্ষায় ছিল।
সোমবার, জলপাইগুড়ির জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে তিন্নিকে আনুষ্ঠানিকভাবে তুলে দেওয়া হয় ইউলেন্ডার হাতে। জলপাইগুড়ির জেলাশাসক শামা পারভিন নিজে উপস্থিত থেকে ছোট্ট তিন্নিকে নতুন মায়ের কোলে তুলে দেন। সঙ্গে ছিলেন ইউলেন্ডার ভাই আবিয়ার এবং প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তারা। এই বিশেষ মুহূর্তে উপস্থিত ছিলেন কোরক হোমের সুপার গৌতম দাস-ও, যিনি এতদিন তিন্নির যত্ন নিয়ে এসেছেন।
তিন্নিকে প্রথমবার কোলে নিয়েই আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন ইউলেন্ডা। তিনি বলেন, “এই মুহূর্তটার জন্য আমি বহুদিন অপেক্ষা করেছি। এখন থেকে তিন্নিই আমার পুরো পৃথিবী।”
জেলাশাসক শামা পারভিন বলেন, “এটা শুধু তিন্নির জন্য নয়, আমাদের কাছেও খুব আবেগপূর্ণ মুহূর্ত। ছোট্ট মেয়েটি আজ নতুন পরিবারের ভালোবাসা পেতে চলেছে, যা সত্যিই অনুপ্রেরণাদায়ক।”
কোরক হোমের সুপার গৌতম দাস বলেন, “তিন্নিকে এতদিন আমরা সন্তান স্নেহেই বড় করেছি। ও নতুন জীবনে ভালো থাকুক, সেটাই আমাদের কাম্য।”
এই ঘটনায় খুশি প্রশাসনের কর্মকর্তারা। একদিকে তিন্নি পেল নতুন মা, অন্যদিকে ইউলেন্ডা পেলেন তার দীর্ঘদিনের কাঙ্ক্ষিত মাতৃত্বের স্বাদ। জলপাইগুড়ির এক অনাথ শিশু এখন নতুন ঠিকানা খুঁজে পেল ভালোবাসার স্পর্শে।