সংবাদদাতা, জলপাইগুড়ি, ২৯ অক্টোবর’২৩ : আদালত জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে জলপাইগুড়ি দম্পতির অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত যুব তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা উপ পুরপ্রধান সৈকত চ্যাটার্জীকে। জেলা বিজেপির অভিযোগ অসুস্থতার অজুহাত দেখিয়ে সৈকত হাসপাতালে রয়েছেন। আর তাঁকে হাসপাতালের শীততাপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে “জামাই আদর” করা হচ্ছে, এরজন্য দায়ী পুলিশ ও হাসপাতালের চিকিৎসক।

রবিবার সাংবাদিক বৈঠক করে এরকমই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুললেন বিজেপি জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি বাপী গোস্বামী। এদিন তিনি ডিবিসি রোডের জেলা বিজেপি কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিজেপি যুব মোর্চার জেলা সভাপতি পলেন ঘোষ, বুবাই কর সহ অন্যান্যরা।
আরো পড়ুন : ১৪ দিনের জেল হেফাজত জলপাইগুড়ি পুরসভার উপ পুরপ্রধান সৈকত চ্যাটার্জীর
উল্লেখ্য, গত ১এপ্রিল জলপাইগুড়ি শহরের পাণ্ডাপাড়ার দম্পতি প্রাক্তন উপ পুরপ্রধান অর্পনা ভট্টাচার্য ও তাঁর স্বামী সুবোধ ভট্টাচার্যের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় সৈকত সহ তাঁর ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ উঠে। সুইসাইড নোট বাজেয়াপ্ত করে পুলিশ। সৈকত ঘনিষ্ঠরা গ্রেপ্তারের পর জামিনে ছাড়া পেয়েছেন। এদিকে সৈকতের আগাম জামিন হাইকোর্ট ও সুপ্রিমকোর্ট নাকচ করে। এরপর সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে জেলা আদালতের দ্বারস্থ হয় সৈকত।

১৮অক্টোবর জেলা আদালতের বিচারক ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছিলেন সৈকতকে। কিন্তু সৈকত জেলে গিয়েই অসুস্থ হয়ে পড়েন। বর্তমানে তিনি অসুস্থতার কারণে জলপাইগুড়ি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। জানা গেছে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা ও ফুসফুসে কিছু সংক্রমনের জেরে সৈকতের চিকিৎসা চলছে।
আরো পড়ুন : দম্পতিকে আত্মহত্যায় ‘প্ররোচনা’ : জলপাইগুড়ি জেলা আদালতে সৈকত চ্যাটার্জী
কিন্তু এদিন এক বহুল প্রচারিত সংবাদ পত্রে “জলপাইগুড়ি মেডিকেল কলেজ যেন বৈঠকখানা সৈকতের দিনভর কেবিনে ভিড় ভাইদের” এই শীর্ষক দিয়ে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। পাশাপাশি অন্য একটি সংবাদে বলা হয় “হেফাজতে থেকেও ব্যস্ত কালীপুজোর আয়োজনে সৈকত”।

এই সংবাদ দুটি প্রকাশের পরই এ দিন বিজেপির জেলা সভাপতি সাংবাদিক বৈঠক করে বলেন, “প্রথমদিন থেকে পুলিশ অভিযুক্ত সৈকত যাকে যুবরাজ বলা হয় তাঁকে সব রকম সুযোগ সুবিধে দিচ্ছে। শীততাপ নিয়ন্ত্রিত আইসি গাড়ির সামনে বসিয়ে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়। এখন অসুস্থতায় অজুহাত দেখিয়ে হাসপাতালের শীততাপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে রেখে সব রকমের সুযোগ সুবিধে তাকে দেওয়া হচ্ছে। এই কারণে আমরা হাসপাতালের চিকিৎসক ও পুলিশকে পার্টি করে আদালতের দ্বারস্থ হতে চলছি।”