বিজেপির ডাকা ১২ ঘন্টার উত্তরবঙ্গ বনধ জলপাইগুড়িতে সফল করতে রাস্তায় নেমে পড়ে বিজেপির নেতা কর্মীরা। বেলা বাড়তেই শহরের দখল নিলো বনধ সমর্থকেরা, চললো মিছিল, বচসা পুলিশের সঙ্গে। বনধে রাস্তায় বার হওয়া টোটোর চাকার হাওয়া বিজেপি কর্মীদের ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ টোটো চালকের। অন্যদিকে বনধের সমর্থনে বড়ো ডাক ঘরের মূল ফটকের সামনে দলীয় পতাকা লাগিয়ে যাওয়ার পর সেটা খুলে ফেলার অভিযোগ বিজেপির। এদিকে বনধ সফল করার জন্য জলপাইগুড়িবাসীকে ধন্যবাদ জানালেন বিজেপি জেলা সভাপতি বাপী গোস্বামী।
সংবাদদাতা, জলপাইগুড়ি : কালিয়াগঞ্জ এর ঘটনার প্রতিবাদে সকাল ৬টা থেকে শুরু হয়েছে বিজেপির ডাকা ১২ ঘন্টার উত্তরবঙ্গ বনধ। বেলা গড়াতেই জলপাইগুড়ি শহরে বনধ সফল করতে রাস্তায় নেমে পড়ে বিজেপির নেতা কর্মীরা। বাইক নিয়ে মিছিল করে বনধের সমর্থনে স্লোগান দিয়ে শহরের বিভিন্ন রাস্তা পরিক্রমা করতে দেখা যায় তাদের।
শুক্রবারের বনধের চেহারা পাল্টে গেলো সকাল এগারোটা থেকে, এই সময় জলপাইগুড়ি জেলা বিজেপি কার্যালয় থেকে একটি মিছিল বনধের সমর্থনে শহরের বিভিন্ন পথ দিয়ে যাত্রা শুরু করে।
মিছিল শুরু মুহুর্তে বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের বচসার ছবিও উঠে এসেছে। যদিও এরপরই বনধ সমর্থকেরা জলপাইগুড়ির বানিজ্যিক এলাকা বলে চিহ্নিত মার্চেন্ট রোড, জেলা আদালত গেট সহ দিনবাজার এলাকা পরিক্রমা করে। আর এর ফলেই সকাল থেকে আংশিক খোলা থাকা দোকান সহ ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান গুলো বন্ধ হয়ে যায়।
বনধকে কেন্দ্র করে বিজেপির সাথে বচসা বাঁধে তৃণমূলের। ঘটনাটি ঘটেছে জলপাইগুড়ি শান্তি পাড়া সরকারি বাস স্ট্যান্ডে (নিচে দেখুন ভিডিও)।
বিজেপি জলপাইগুড়ি জেলার যুব মোর্চার সভাপতি পলেন ঘোষ বলেন, তৃণমূলের কিছু কর্মী আজ শান্তি পাড়ার তাদের ডাকা বনধ বানচাল করার চেষ্টা করলে বচসা বাঁধে। পলেন বাবুর দাবি, তাদের আজকের এই বনধ সর্বান্তক সফল হয়েছে।
অপরদিকে তৃণমূলের জলপাইগুড়ির INTTUC টাউন ব্লক সভাপতি পূন্যব্রত মিত্র জানান, শ্রমজীবী মানুষের পেটে লাথি মারা এই বনধ তৃণমূল শ্রমিক সংগঠন সমর্থন করে না। তাদের সংগঠনের সমস্ত যানবাহন আজ সচল রয়েছে।
পাশাপাশি জলপাইগুড়ি বড়পোস্ট অফিসে বিজেপির নেতা কর্মীরা বনধের সর্মথনে পিকেটিং করেন। এদিন সকালে বড়ো ডাক ঘরের মূল ফটকের সামনে দলীয় পতাকা লাগিয়ে যাওয়ার পর ও কেউ বা কারা সেই পতাকা খুলে ফেলে বলে অভিযোগ করেন বিজেপির যুব মোর্চার জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি পলেন ঘোষ। এছাড়াও পোস্ট অফিসের আধিকারিক ও কৰ্মীদের বনধের সমর্থনে আজ কাজ না করার আহবান জানান বিজেপি নেতৃত্ব।
অন্যদিকে বনধের মধ্যে রাস্তায় বার হওয়া টোটোর চাকার হাওয়া ছেড়ে দিচ্ছে বিজেপির কর্মীরা বলে অভিযোগ টোটো চালকের। এদিন স্কুলের পড়ুয়াদের নিয়ে যাওয়ার পথে শহরের ডিবিসিরোড এলাকায় বনধ সমর্থনকারীরা এক টোটোর চাকার হাওয়া ছেড়ে দেয় বলে অভিযোগ করেন গোবিন্দ দাস নামে এক টোটোচালক। তিনি বলেন স্কুলের পড়ুয়াদের নিয়ে যাওয়ার পথে টোটোর চাকার হাওয়া ছেড়ে দিল আমার।
এদিকে এখনও পর্যন্ত বনধ স্বত:স্ফূর্ত ও শান্তিপূর্ণ জানালেন বিজেপির জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি বাপী গোস্বামী। উল্লেখ্য, উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জে এক নাবালিকাকে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ উঠে। এরপর শুরু হয় পুলিশের ধরপাকড় এবং বিজেপি কর্মী মৃত্যুঞ্জয় বর্মনকে খুনের প্রতিবাদে আজ ১২ ঘন্টার উত্তরবঙ্গ বনধের ডাক দিয়েছে রাজ্য বিজেপি।
তিনি আরও বলেন, জলপাইগুড়িবাসীকে ধন্যবাদ জানাই বনধ’কে সর্বাত্মক সফল করার জন্য। বনধের দিনে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও অভিযোগ করেন বাপী বাবু। আজ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা নিয়ে কটাক্ষ করে বাপী বাবু বলেন, উনি তৃণমূলের যুবরাজ ! সাধারণ মানুষের নন! বিজেপি পার্টিরও যুবরাজ না বলে জানান বাপী গোস্বামী ।
