শিলিগুড়ি : খড়িবাড়ির বাতাসি চা বাগানে চা পাতা তুলতে গিয়ে চাঞ্চল্যকর আবিষ্কার—পাতার আড়ালে মিলল এক পূর্ণবয়স্ক চিতাবাঘের পচনধরা মৃতদেহ। সকালে বাগানে কাজে নামা শ্রমিকদের চোখে পড়ে এই দৃশ্য, মুহূর্তে এলাকায় ছড়ায় উত্তেজনা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত সাতদিন ধরে চাপাতা তোলার কাজ বন্ধ ছিল এই চা বাগানে। আজ পুনরায় কাজে নামতেই পাতার ঘন সবুজের মধ্যে লুকিয়ে থাকা মৃত চিতাবাঘের গন্ধ ও রূপ প্রকাশ্যে আসে। শ্রমিকরা সঙ্গে সঙ্গে খবর দেন স্থানীয় বনদফতরকে।

টুকরিয়াঝাড় রেঞ্জের বনকর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে মৃতদেহ উদ্ধার করেন। বনদফতরের প্রাথমিক অনুমান, চিতাবাঘটির মৃত্যু ঘটেছে কয়েকদিন আগেই। মরদেহের গায়ে পচন ও দুর্গন্ধ থেকে এই ধারণা।
চিতাবাঘটির মৃত্যুর কারণ এখনও অস্পষ্ট। স্বাভাবিক মৃত্যু, আহত হয়ে মৃত্যু না কি অন্য কোনও কারণ—তা জানতে পাঠানো হয়েছে মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য বেঙ্গল সাফারি-তে।

বনদফতরের এক আধিকারিক বলেন,“চিতাবাঘটি প্রাপ্তবয়স্ক ছিল। মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হতে পোস্টমর্টেম রিপোর্টের অপেক্ষা করা হচ্ছে। যদি কেউ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ক্ষতি করে থাকে, তা হলে আইন অনুযায়ী কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এই ঘটনার জেরে বাতাসি চা বাগানে নতুন করে উদ্বেগ ছড়িয়েছে। চা বাগানের কর্মীদের অনেকে এখনও আতঙ্কে। এক শ্রমিকের কথায়, “বাঘ মরেছে, ঠিক আছে। কিন্তু আরও যদি থাকে! আমাদের সুরক্ষা কে দেবে?”
একদিকে চা শ্রমিকদের অনিশ্চয়তা, অন্যদিকে প্রাকৃতিক ভারসাম্যের প্রশ্ন। চিতাবাঘের মৃত্যু শুধু এক প্রাণের অবসান নয়—এটি জঙ্গলে মানুষের উপস্থিতির ক্রমবর্ধমান চাপে বন্যপ্রাণীদের অস্তিত্ব সংকটের এক মর্মান্তিক ছবি।