দার্জিলিং : বুধবার গভীর রাতে দার্জিলিঙের কাকঝোরা বন বিভাগের আবাসনে ঘটে গেল এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড। দার্জিলিং টেরিটোরিয়াল ডিভিশনের অধীন কাকঝোরা রেঞ্জের স্টাফ কোয়ার্টারগুলিতে আচমকা আগুন লাগার ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে শৈলশহরে।

প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, প্রথমে একটি খালি কোয়ার্টার থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। এরপর মুহূর্তের মধ্যে সেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে আশেপাশের আরও কোয়ার্টারগুলিতে। কাঠের তৈরি পুরনো ঘরগুলি হওয়ায় আগুন দ্রুত ছড়ায় এবং আটটি কোয়ার্টার সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়ে যায়। আগুনের তাপে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ডিভিশনাল ফরেস্ট অফিসারের কার্যালয়ের একটি অংশও।

স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, প্রথমে বিকট শব্দ ও ধোঁয়া দেখে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তড়িঘড়ি বনকর্মীরা ও স্থানীয় মানুষজন আগুন নেভানোর প্রাথমিক চেষ্টা চালান। পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছায় দার্জিলিং দমকল কেন্দ্রের তিনটি ইঞ্জিন। প্রায় কয়েক ঘণ্টার নিরবচ্ছিন্ন চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়।

ঘটনার পর পরই ঘটনাস্থলে পৌঁছন দার্জিলিং ওয়াইল্ডলাইফ ডিভিশনের আধিকারিক, দার্জিলিং চিড়িয়াখানার আধিকারিক সহ অন্যান্য বনকর্তারা।
সৌভাগ্যবশত, এই ঘটনায় কোনো প্রাণহানির খবর নেই, তবে প্রশাসনের আশঙ্কা, বন দপ্তরের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র এবং আসবাবপত্র পুড়ে গিয়েছে। আগুনে ক্ষতির পরিমাণ ও তার প্রকৃত কারণ জানতে ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে দার্জিলিং জেলা প্রশাসন ও দমকল বিভাগ।

এই প্রসঙ্গে উত্তরবঙ্গের প্রধান মুখ্য বনপাল (বন্যপ্রাণ) ভাস্কর জেভি বলেন,
“দার্জিলিঙের কাকঝোরা স্টাফ কোয়ার্টারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আটটি কোয়ার্টার পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে। দমকল বাহিনীর প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও ক্ষতির পরিমাণ বিশাল। আগুন লাগার প্রকৃত কারণ জানতে তদন্ত শুরু হয়েছে।”
স্থানীয় সূত্রে অনুমান, শর্ট সার্কিট থেকেই এই অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হতে পারে। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনই কোনো কারণ চূড়ান্তভাবে জানানো হয়নি।
দার্জিলিংয়ের মতো আবহাওয়াসংবেদনশীল অঞ্চলে এই ধরনের কাঠের আবাসনে অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকি নতুন করে সামনে আনলো। বিশেষজ্ঞ মহলের মতে, ভবিষ্যতে এমন দুর্ঘটনা এড়াতে বন দপ্তরের আবাসনগুলিতে আধুনিক অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ও নিরাপত্তা পরিকাঠামো জোরদার করা প্রয়োজন।
এদিকে, ভয়াবহ এই অগ্নিকাণ্ডে জেরবার বন দপ্তরের কর্মচারীরা দ্রুত পুনর্বাসনের দাবি জানিয়েছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকেও ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে থাকার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।