জলপাইগুড়ি : বিশ্বাস যখন ভাঙে, তা শুধু একজনের নয়—ভেঙে যায় গোটা সমাজের ভিত। জলপাইগুড়িতে এমনই এক ঘটনায় শেষপর্যন্ত ন্যায় পেল এক নাবালিকা। প্রতিবেশী ‘দাদু’র বন্ধুর হাতে নির্যাতনের শিকার হয়ে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়া মেয়েটির মামলায় বুধবার জলপাইগুড়ির বিশেষ পকসো আদালতের বিচারক রিন্টু সুর অভিযুক্তকে ২৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন।

ঘটনার সূত্রপাত ২০১৯ সালের ৩ জুন। জলপাইগুড়ি মহিলা থানায় অভিযোগ দায়ের করে নাবালিকার পরিবার। অভিযোগ ছিল, প্রতিবেশী পরিচিত ‘দাদু’র এক বন্ধু ভয় দেখিয়ে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে মেয়েটির সঙ্গে। ফলে সে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে এবং এক শিশুর জন্মও দেয়। পরিবার সেই ভয়ঙ্কর ঘটনার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করে।
এদিন আদালতে ১১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ ও উভয় পক্ষের যুক্তি-পাল্টা যুক্তি শোনার পর বিচারক অভিযুক্তকে কঠোর শাস্তির নির্দেশ দেন। শুধু কারাদণ্ড নয়, আদালত অভিযুক্তকে এক লক্ষ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও দুই মাসের কারাদণ্ড দেন। পাশাপাশি, নির্যাতিতার ক্ষতিপূরণ বাবদ জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষকে পাঁচ লক্ষ টাকা দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছেন বিচারক।
বিশেষ পকসো আদালতের সরকারি আইনজীবী দেবাশীষ দত্ত বলেন, “এই রায় সমাজের কাছে বার্তা— ন্যায়ের দরজায় দাঁড়িয়ে অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ালে বিচার হয়। আমরা নাবালিকার পাশে ছিলাম, থাকব।”
এই রায় শুধু এক নাবালিকার জন্য ন্যায় নয়—সমস্ত নির্যাতিতাদের জন্য এক আশার আলো।