নিজস্ব সংবাদদাতা, জলপাইগুড়ি, ২০ মার্চ ২০২২ : জলপাইগুড়ি তথা উত্তরবঙ্গের মানুষের দীর্ঘ সময়ের স্বপ্ন এপার ওপার বাংলা যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল।দীর্ঘদিন যাবৎ এই ট্রেন পরিষেবা বন্ধ রয়েছে। এবার সেই স্বপ্ন পূরণের ইঙ্গিত দিলেন জলপাইগুড়ির বিজেপি সাংসদ ডাঃ জয়ন্ত কুমার রায়।

রবিবার জলপাইগুড়ি ডিবিসি রোডের জেলা বিজেপি কার্যালয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলনে এমনটাই আভাস দিয়েছেন এই প্রকল্পটি নিয়ে দু হাজার উনিশ সাল থেকে সংসদে সোচ্চার জলপাইগুড়ির প্রতিনিধি ডাঃ জয়ন্ত কুমার রায়। এদিন তিনি জানিয়েছেন, সব কিছু সঠিক ভাবে চললে খুব শীঘ্রই ঢাকা থেকে ছেড়ে চিলাহাটি দিয়ে জলপাইগুড়ি হয়ে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন পর্যন্ত ছুটবে দু দেশের মধ্যেকার মিতালি এক্সপ্রেস।

উল্লেখ্য, ১৯৬৫ সালে ভারত পাকিস্তানের যুদ্ধের পরে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল হলদিবাড়ি চিলাহাটি রুটে রেল চলাচল। ফের ২০২০ সালের ১৭ ডিসেম্বর ভারত ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীরা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধন করেছিলেন আন্তর্জাতিক হলদিবাড়ি-চিলাহাটি রেল রুটটি। উদ্বোধনের পর এই রুট দিয়ে শুরু হয়েছিল পণ্যবাহী ট্রেন চলাচল। এরপর ২০২১ সালের ২৭ মার্চ দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীরা যাত্রীবাহী মিতালি এক্সপ্রেসের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছিলেন ভার্চুয়ালি। তবে করোনা পরিস্থিতির জেরে ভারত পর্যটন ভিসা দেওয়া বন্ধ রাখায় মিতালি এক্সপ্রেসের চাকা গড়ায় নি। বর্তমানে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসায় মিতালি এক্সপ্রেস চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুই দেশের রেলমন্ত্রক। আর এই এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রা শুরুর সম্ভাব্য দিনক্ষণ ধরা হয়েছে আগামী ২৬শে মার্চ।

রেল সূত্রে খবর, ১০ বগির এই আন্তর্জাতিক ট্রেনটি ২৬ মার্চ বাংলাদেশের ঢাকা থেকে যাত্রী নিয়ে রওয়ানা দিয়ে নীলফামারি, ডোমার, চিলাহাটি স্টেশন হয়ে ভারতের হলদিবাড়ি স্টেশনে এসে পৌঁছাবে। উল্লেখ্য, এই ট্রেনের বগি পরিবর্তন হবে না, তবে ইঞ্জিন বদল হবে, ফলে যাত্রীদের ট্রেন পাল্টাতে হবে না। বাংলাদেশ থেকে আসা ইঞ্জিনটি হলদিবাড়ি স্টেশনে থাকবে, ওই দেশের চালকরাও ওখানেই থেকে যাবেন। হলদিবাড়ি থেকে ভারতীয় ইঞ্জিন দিয়ে ট্রেনটিকে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে নিয়ে আসবেন ভারতের চালকরা। মিতালি এক্সপ্রেস জলপাইগুড়ি স্টেশনে আপাতত দাঁড়াবে না, ট্রেনটি হলদিবাড়ি ও নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনেই দাঁড়াবে। আর নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে মিতালি এক্সপ্রেসের টিকিট পাওয়া যাবে।
এই বিষয়ে ডাঃ জয়ন্ত কুমার রায় জানিয়েছেন, ২০১৯ সালে এই ট্রেনটি পুনরায় চালুর দাবি তিনি সংসদে তুলেছিলেন। জয়ন্ত বাবু বলেন, ট্রেনটি সপ্তাহে তিনদিন চলবে। ১০টা কোচ থাকবে। এর পাশাপাশি তিনি জলপাইগুড়িতে একটি ইমিগ্রেশন সেন্টার করার দাবি জানিয়ে কেন্দ্রকে চিঠি দিয়েছেন বলেও এদিন জানিয়েছেন সাংসদ।