ধুপগুড়ি : উত্তরবঙ্গের কৃষিক্ষেত্রে এবার নতুন আশার আলো দেখাচ্ছে গাঁদা ফুল চাষ। এতদিন পর্যন্ত এই অঞ্চলে মূলত শাকসব্জি এবং অন্যান্য ফসলের চাষই বেশি হত, কিন্তু এখন ধীরে ধীরে পরিবর্তন আসছে চাষাবাদের ধরনে। যেখানে একদিকে কৃষকদের ফসল চাষে লোকসানের মুখে পড়তে হয়েছে, সেখানে গাঁদা ফুল চাষ যেন নতুন করে লাভের সম্ভাবনা জাগিয়েছে।

ধূপগুড়ি ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকায় এখন দেখা যাচ্ছে গাঁদা ফুলের ক্ষেত। বিশেষ করে সাকোয়াঝোড়া ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের নিরঞ্জনপাট এলাকায়, রাস্তার দু’ধারে ছড়িয়ে পড়েছে গাঁদা ফুলের শোভা। কৃষকদের মতে, ফুল চাষ তুলনামূলকভাবে লাভজনক, তাই অনেকে এখন শাকসব্জি বা অন্যান্য ফসলের পরিবর্তে ফুলের চাষের দিকে ঝুঁকছেন।
ফুলের বাজারে বর্তমানে চাহিদা বেশ ভালো। বিয়ের মরসুম এবং বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানের কারণে গাঁদা ফুলের চাহিদা এখন তুঙ্গে। কৃষক টুম্পা সিংহ রায় ও শ্যামল রায় জানালেন, ফুল চাষ করে তাঁরা যথেষ্ট লাভবান হচ্ছেন। গত অক্টোবরে দুর্গাপুজোর সময় ২০টি চেনের গাঁদা ফুলের দাম ছিল ৬০০ টাকা, যা এখন আরও বেড়েছে। ফলে ফুল চাষে আগ্রহী হচ্ছেন অনেকেই।

বর্ষার শেষ দিক থেকে শুরু হয় এই ফুল চাষ এবং কয়েক মাসের মধ্যেই কৃষকরা লাভের মুখ দেখতে পান। সাধারণত এই জমিগুলিতে অন্যান্য সময় ঢ্যাঁড়স, বিন্স, ধান ইত্যাদির চাষ করা হয়। কিন্তু এখন অনেকেই মনে করছেন, গাঁদা ফুলের চাষ আরও বেশি অর্থকরী।
উত্তরবঙ্গের কৃষকরা এতদিন বাইরের জেলা থেকে ফুল আমদানি করতেন, কিন্তু এখন নিজেদের ফুল উৎপাদন করেই স্থানীয় চাহিদা মেটাতে সক্ষম হচ্ছেন। এতে যেমন কৃষকদের আয় বাড়ছে, তেমনই ফুলের বাজারেও পরিবর্তন আসছে।
এই নতুন দিকনির্দেশ যদি সফলভাবে চলতে থাকে, তাহলে আগামী দিনে উত্তরবঙ্গ গাঁদা ফুলের অন্যতম প্রধান উৎপাদক অঞ্চলে পরিণত হতে পারে। আর কৃষকরা যে নতুন সম্ভাবনার সন্ধান পেয়েছেন, তা তাঁদের মুখের হাসিই প্রমাণ করছে।