নিজস্ব প্রতিবেদন, জলপাইগুড়ি : রবিবার সকাল। বৈকুণ্ঠপুর জঙ্গল থেকে আচমকাই লোকালয়ে হানা দেয় দুই বাইসন। প্রথমে রায়পুর চা-বাগান, পরে রংধামালি এলাকা — জনবসতিপূর্ণ এলাকা জুড়ে ছুটতে থাকে বন্য প্রাণীরা। মানুষের চিৎকারে আতঙ্কিত হয়ে ওঠে তারা। দিশেহারা হয়ে দৌড়াতে গিয়ে বাইসনের সামনে পড়ে প্রাণ হারান এক গ্রামবাসী, আহত হন আরও একজন।
খবর পেয়েই দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় বন দফতর। বিন্নাগুড়ি ওয়াইল্ডলাইফ স্কোয়াড, বনপাল ও উচ্চপদস্থ আধিকারিকরাও উপস্থিত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বিকেলের দিকে বন দফতরের পক্ষ থেকে পরপর দুটি করে ঘুম পাড়ানি গুলি ছোড়া হয় বাইসন দু’টির দিকে।
কিন্তু যা হওয়ার ছিল না, তাই ঘটল – ঘুম পাড়ানি গুলি নয়, দুটি বাইসনের একটি চিরঘুমে চলে গেল।
ঘটনাস্থলে আনা হয় JCB। মৃত প্রাণীদেহ উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় ময়নাতদন্তের জন্য।
এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে ডুয়ার্সের একাধিক পরিবেশ সংস্থা ও প্রাণীপ্রেমী সংগঠন।
পরিবেশ কর্মী অনির্বাণ মজুমদার বলেন,
“পরপর দুটি ঘুম পাড়ানি গুলি করা কখনওই বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি নয়। অদক্ষতার কারণেই আবারও প্রাণ গেল এক নিরীহ বন্যপ্রাণীর। এটা নিছক গাফিলতি নয়, অপরাধ।”
বন দফতরের এই ভূমিকা ঘিরে প্রশ্ন উঠছে বিভিন্ন মহলে। বিশেষ করে, প্রাণীকে বাঁচানোর দায়িত্ব যাদের হাতে, তারাই কি প্রাণের প্রতি এতটা উদাসীন?
ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে বন দফতর। তবে স্থানীয়দের একটাই প্রশ্ন— “বাইসন ভুল করে লোকালয়ে এসেছিল। কিন্তু তাদের ঘুম পাড়িয়ে চিরদিনের জন্য বিদায় দিয়ে দেওয়াটাই কি সমাধান?”
প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। উত্তরের অপেক্ষায় গোটা ডুয়ার্স।