জলপাইগুড়ি, ২১ জুলাই : জলপাইগুড়ি শহরে পিডি কলেজে একাংশ বর্তমান ছাত্রীর মদতে বহিরাগতদের দাদাগিরির অভিযোগ উঠল কলেজ চত্বরে। সোমবার কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দেখা করতে আসা আদিবাসী নেতাদের আটকানোর চেষ্টা, সাংবাদিকরা ছবি করতে গেলেও বাঁধা দিয়ে মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা। ছবি তুলতে গেলে সাংবাদিকদের দেখে কলেজ থেকে দৌঁড়ে পালাল একদল বহিরাগত ছাত্রী। এই বহিরাগতদের অভদ্র আচারনের জন্য ক্ষমা চাইলেন কলেজ কর্তৃপক্ষ।

তবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বহিরাগত তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দাদাগিরি দলের নেতা থেকে শুরু করে কলেজ কর্তৃপক্ষ খুব একটা ভালভাবে দেখছেন না। কলেজের অধ্যাপক অধ্যাপিকাদের চেয়ারে বহিরাগত ছাত্রীদের বসে থাকতে দেখা গেল। সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে পড়েই দৌঁড়ে পালাল বহিরাগতরা।
কলেজ কর্তৃপক্ষের তরফে জানা গিয়েছে, পিডি কলেজের এসিস্ট্যান্ট প্রফেসরকে এনএসএস দ্বায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি কাজ না করায় তাঁকে বিভিন্ন অজুহাত দিয়েছি শোকজ করা হয় কলেজ কর্তৃপক্ষের তরফে৷ যেহেতু তিনি আদিবাসী এই কারণে এসিস্ট্যান্ট প্রফেসর পশ্চিমবঙ্গ আদিবাসী কল্যাণ সমিতিতে বিষয়টি জানিয়েছিলেন। এ দিন সমিতির প্রতিনিধিরা কলেজ কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে প্রিন্সিপালের সঙ্গে দেখা করতে আসেন। সেই সময় কলেজের গেটে থাকা নিরাপত্তা কর্মীর পাশাপাশি একাংশ ছাত্রী বহিরাগতদের সঙ্গে নিয়ে সংবাদমাধ্যম ছবি তুলে গেলে বাঁধা দেয়। মোবাইল কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। তবে বহিরাগতদের দাদাগিরি দেখে হতবাক কলেজ কর্তৃপক্ষ। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ছত্রছায়ায় থেকে কলেজে দাদাগিরির অভিযোগ উঠল বহিরাগতদের বিরুদ্ধে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় কোতোয়ালি থানার পুলিশ।
কলেজের ছাত্রী লিজা সূত্রধর সাংবাদিকরা প্রশ্ন করতেই ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান।
পশ্চিমবঙ্গ আদিবাসী কল্যাণ সমিতির তরফে রাজেশ লাকড়া বলেন, “প্রিন্সিপাল আশ্বস্ত করেছেন তিনি অধ্যাপিকাকে শোকজ করেননি। তবে কলেজে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের বহিরাগতদের যে ব্যবহার এটা ভাল লাগলো না।”
পশ্চিমবঙ্গ আদিবাসী কল্যাণ সমিতির সহ সভাপতি প্রধান হেমব্রম বলেন, “কলেজে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নাম করে যেভাবে বহিরাগতদের দাদাগিরি এতে আমাদের দিদি’র (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) বদনাম হচ্ছে।”
পিডি কলেজের প্রিন্সিপাল এদিন কলেজ চত্বরে কান্নায় ভেঙে পরেন ও অসুস্থ হয়ে যায়। এই কারণে প্রিন্সিপালের তরফে কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি তপন মিত্র বলেন, “এক অধ্যাপিকার সঙ্গে ভুলবোঝাবুঝি হয়েছিল মিটে গিয়েছে। তবে সাংবাদিকদের আটকানোর কোনও ব্যপার নেই। কলেজে বহিরাগতরা এসে সাংবাদিকদের আটকে দিচ্ছেন এর জন্য ক্ষমাপ্রার্থী। এরপর থেকে এরকম ঘটনা ঘটবে না আশ্বাস দিচ্ছি।”

এই ঘটনায় কলেজ কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বহিরাগতদের এহেন তাণ্ডব শিক্ষাক্ষেত্রের পরিবেশকেই কলুষিত করছে বলে মনে করছে বিভিন্ন মহল।

স্থানীয় কোতোয়ালি থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। কলেজে ছাত্র রাজনীতির নামে দাদাগিরি যে আরও একবার প্রকাশ্যে, তা বলাই যায়।
