নতুন করে প্রাণ ফিরে পেল ডুয়ার্সের পানঝোরা জঙ্গল ক্যাম্প; শুরু অনলাইন বুকিং

ডুয়ার্স : ডুয়ার্সের পর্যটন মানচিত্রে যোগ হল এক নতুন দিগন্ত। দীর্ঘ চার বছর পর আবারও দরজা খুলছে বহু প্রতীক্ষিত পানঝোরা জঙ্গল ক্যাম্প। বাংলা নববর্ষের শুরুতেই বন দফতরের তরফে ডুয়ার্সবাসীদের জন্য এই উপহার যেন নতুন আশার আলো ছড়িয়েছে গোটা অঞ্চলে। আগামী ২১ এপ্রিল থেকে শুরু হচ্ছে অনলাইন বুকিং, দেশি-বিদেশি পর্যটকরা আবারও উপভোগ করতে পারবেন এই জঙ্গলের বুকে রোমাঞ্চকর রাতযাপন।

জলপাইগুড়ি জেলার মেটেলি থানার অন্তর্গত জাতীয় সড়কের পাশে, গরুমারা জাতীয় উদ্যান বিভাগের অন্তর্গত চাপরামারির লাগোয়া উঁচু টিলায় গড়ে উঠেছে এই ক্যাম্প। এক পাশে পাহাড়ি নদী মূর্তি, যার ওপর সেতু পেরিয়ে ছুটে যায় ট্রেন, তারই মাঝে ভিস্তাডোম পর্যটন স্পেশাল ট্রেনের ঝলক যেন চোখে পড়ে রূপকথার মতো। সকাল থেকেই জঙ্গলে ভেসে আসে ময়ূরের ডাক, আর সন্ধ্যা নামলেই দেখা মেলে হরিণ, বনমোরগ ও বন্য শুয়োরের।

এই ক্যাম্পে আপাতত চারটি কটেজ তৈরি হয়েছে, যেখানে তিন সদস্যের পরিবার থাকতে পারবেন। পর্যটকদের খাবার-দাবার ও পরিষেবা দেখভাল করবেন পানঝোরা বনবস্তির জনজাতি পরিবারদের নিয়ে গঠিত জয়েন্ট ফরেস্ট ম্যানেজমেন্ট কমিটি।

কমিটির সম্পাদক অমৃত ছেত্রী বলেন, “বিগত চার বছর আমরা খুব কষ্টে কাটিয়েছি। এখন আবার পর্যটক আসবেন, আমরা আবার আয় করতে পারব। তাই রাজ্য সরকার ও বন দফতরকে ধন্যবাদ জানাই আমাদের পাশে থাকার জন্য।”

এ প্রসঙ্গে ডুয়ার্সের পরিবেশ কর্মী তানিয়া হক সর্দার জানান, “এই ধরনের প্রজেক্ট ডুয়ার্সের তিনটি স্তম্ভ— বনবস্তিবাসী, পর্যটন শিল্প ও স্থানীয় অর্থনীতিকে একসঙ্গে শক্তিশালী করে। সরকারের এই পদক্ষেপ অত্যন্ত প্রশংসনীয়।”

পানঝোরা বনবস্তির বাসিন্দা মনিকা কার্কি আবেগে ভেসে বলেন,”কটেজ আবার খুলছে, টুরিস্টরা আসবেন, আমাদের জীবিকাও সচল হবে—এই আশাতেই মুখে হাসি ফিরেছে।”

শনিবার থেকেই নতুন সাজে সেজে উঠেছে পানঝোরা ক্যাম্প। বনের মধ্যে এমন এক শান্ত অথচ রোমাঞ্চকর পরিবেশে রাতযাপন এখন এক ক্লিকেই বুকিং করা যাবে। ডুয়ার্সের সবুজের মাঝে এই ক্যাম্প যেন প্রকৃতির বুকে ফিরে পাওয়ার ঠিকানা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *