জলপাইগুড়ি: তিস্তা নদী যেন শুধুই একটি জলধারা নয়—উত্তরবঙ্গ ও সিকিমের হৃদস্পন্দন। অথচ সেই নদীই আজ মৃত্যুর মুখে! সিকিমের ২০২৩-এর বিধ্বংসী বন্যার পরে “ফিলান্থ্রপি” নামে একটি পরিবেশ সচেতন সংগঠন গোটা তিস্তা নদীর ভারতীয় অংশ—প্রায় ৩৫০ কিলোমিটার—পায়ে হেঁটে অতিক্রম করে তুলে ধরল এক ভয়ঙ্কর ছবি।

সোমবার জলপাইগুড়ি প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলনে সংগঠনের তরফে সদস্য সম্রাট মৌলিক বলেন, “আমরা তিস্তার উৎস থেকে জলপাইগুড়ি পর্যন্ত হাঁটার অভিজ্ঞতায় আশার চেয়ে আশঙ্কাই বেশি পেয়েছি। সচেতনতা যে কতটা কম, তা পথেই প্রমাণ পেয়েছি। বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গে প্লাস্টিক দূষণ, রাসায়নিক সার ব্যবহার, এবং নদী-তীরবর্তী অবাধ চাষাবাদ নদীকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।”

বিপন্ন জলজ জীবন: নদীতে রাসায়নিক সারের প্রবাহে মাছের সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে কমে গিয়েছে। মৎস্যজীবীদের জীবনযাপন আজ অনিশ্চিত। তিস্তার পাড়ঘেঁষা বহু পরিবার এর জেরে অর্থনৈতিক সংকটে পড়তে পারে।

প্রকৃতির প্রতিশোধ আসন্ন? সম্রাট মৌলিক আশঙ্কা প্রকাশ করেন, “গাজোলডোবা থেকে জলপাইগুড়ি পর্যন্ত নদীর দুই তীরে চাষের চাপ বেড়েছে। কিন্তু নদীর গভীরতা বাড়ানো হয়নি। অদূর ভবিষ্যতে বড় কোনও বৃষ্টি ভয়াবহ বন্যা ডেকে আনতে পারে।”

সতর্কবার্তা ও আহ্বান: সিকিমে যেখানে প্লাস্টিক ব্যবহার ও পরিবেশ নিয়ে যথেষ্ট সচেতনতা রয়েছে, সেখানে পশ্চিমবঙ্গে এই বিষয়ে গাফিলতি উদ্বেগজনক। ‘ফিলান্থ্রপি’-র মতে এখনই সচেতন না হলে, তিস্তা হয়ে উঠতে পারে উত্তরবঙ্গের জন্য এক প্রকৃতিক বিপর্যয়ের নাম।
সম্রাট মৌলিক, সদস্য, ফিলান্থ্রপি : “তিস্তা শুধু নদী নয়, জীবনের ধারক। কিন্তু এখন তার বুকেই বয়ে যাচ্ছে নীরব বিপদ।”