বেহাল পুর পরিষেবা – অভিযোগ জলপাইগুড়ি পুরসভার ২৫ নং ওয়ার্ডের একাংশ বাসিন্দার

সংবাদদাতা, জলপাইগুড়ি : দীর্ঘ কয়েক বছর ধরেই বেহাল রাস্তা, এলাকার নালাগুলো বন্ধ হওয়ার মুখে, মাঝে মধ্যেই পুরসভার সরবরাহ জল আসছে না – এমনই নানান সমস্যায় জেরবার জলপাইগুড়ি পুরসভার 25 নং ওয়ার্ডের একাংশ বাসিন্দা। তারা অভিযোগ করে বলছেন, পঞ্চায়েতেই ভালো ছিলেন তারা। পুর এলাকা হওয়ার পর ন্যূনতম পরিসেবাটুকুও পাচ্ছেন না তারা।

তাই দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত এই ওয়ার্ডের মানুষরা সোমবার সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধির কাছে ক্ষোভে ফেটে পড়লেন। তাদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন পুরসভার এই ওয়ার্ড বিরোধী দলের হাতে ছিল। কিন্তু ওয়ার্ডবাসী এবার পরিবর্তন করে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থীকে বিজয়ী করেছিলেন ওয়ার্ডে উন্নয়নের কাজ হবে এই আশায়। প্রায় এক বছর হতে চলল তৃণমূল পুরবোর্ড গঠন হয়েছে কিন্তু উন্নয়নের কোন আশার আলো দেখতে পায়নি এলাকাবাসী।

এলাকার রাস্তাঘাট এতটাই জরাজীর্ণ যে এলাকায় কোন টোটো আসতে চায় না। স্থানীয়দের অভিযোগ, তাদের রাস্তাগুলো পুরসভায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর আর সংস্কার হয় নি। অমৃত জল প্রকল্পের পাইপ লাইন বসানোর জন্য রাস্তা খোঁড়ায় আরো খারাপ হয়েছে। কিন্তু সংস্কারের ফাঁকা প্রতিশ্রুতি ছাড়া কিছুই মেলেনি।

দীর্ঘদিন এলাকার নালাগুলো থেকে মাটি না তোলায় নালাগুলো বন্ধ হওয়ার মুখে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, পঞ্চায়েত আমলে তাদের এলাকার নালাগুলো পর্যাপ্ত গভীর ছিল এবং প্রতি বছর নালাগুলো থেকে মাটি তোলা হত। কিন্তু পুরসভা হওয়ার পর থেকে শুধু আবর্জনা আর আগাছাই পরিষ্কার করা হয় তাও বছরে দু তিনবার। নালাগুলোর গভীরতা হারিয়ে যাওয়ার একটু বৃষ্টি হলেই রাস্তায় জল জমে যায়।

আর পুরসভার সরবরাহ জল মাঝে মধ্যেই বন্ধ হয়ে পড়ছে। উল্লেখ্য, মাসকলাইবাড়ি পাম্প স্টেশনের মাধ্যমে এই এলাকায় জল সরবরাহ করা হয়। আগে দুটি পাম্পের সাহায্যে এই পাম্প স্টেশনে জল তোলা হত। কিন্তু এবার দুর্গাপুজোর পরে একটি পাম্পের বোরিং খারাপ হয়ে যাওয়ায় বর্তমানে একটি পাম্প দিয়ে এলাকায় জল সরবরাহ করা হচ্ছে। ওই পাম্পটি কোন দিন বিকল হয়ে গেলে এলাকা জলবিহীন হয়ে পড়ে। জানা গিয়েছিল কালীপূজার পর ওই সমস্যা মেটাতে উদ্যোগ নেবে পুরসভা। কিন্তু আজ পর্যন্ত পুরসভার তেমন কোন উদ্যোগ ওয়ার্ডবাসীদের নজরে পড়েনি। ফলে প্রায়শই জলকষ্টে ভুগতে হচ্ছে এলাকাবাসীদের।

এলাকাবাসী তথা তৃণমূল কর্মী বাণী চৌধুরী জানান, পুরসভা থেকে আমরা জল, ড্রেন, রাস্তা, পথ বাতি এগুলোই আশা করি। কিন্তু এসবই পাচ্ছি না ঠিকমতো। এর থেকে তো আগের বোর্ড ভালো ছিল বলে জানান তিনি।

এলাকাবাসী ঝর্ণা পাল জানান, পরশু দিন থেকে বাড়িতে জল আসছে না। রাস্তার কল থেকে বাড়িতে জল টেনে কাজ করা কি সম্ভব। রাস্তাও খারাপ। টোটো চালকরা ওই দূরের মোড়ে নামিয়ে দেয় খারাপ রাস্তার জন্য।

আর এক এলাকাবাসী দীপঙ্কর দত্ত বলেন, দীর্ঘ প্রায় 6 মাস থেকে জল সমস্যায় ভুগছি। মাঝে মাঝেই জল আসছে না এলাকায়। রাস্তা দিয়ে চলাচল করা যায় না এতটাই খারাপ অবস্থা রাস্তার। বয়ষ্করা এই রাস্তা দিয়ে হাঁটতে পারেন না। আর ড্রেন পরিস্কার হয় চার পাঁচ মাস অন্তর। মশার অত্যাচারে বাড়িতে টেকা যায় না।

অন্যদিকে ওয়ার্ড সভাপতি গোপাল কৃষ্ণ অধিকারী জানান, স্থানীয় কাউন্সিলর ভীষণভাবে চেষ্টা করছেন পরিষেবা দেওয়ার জন্য। সব কাজ হবে। ধীরে ধীরে হবে। দরকারে আমি উর্দ্ধতন কতৃপক্ষের সাথে এবিষয়ে কথা বলবো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *