আমিরুল ইসলাম, মালদা, ১৪ অক্টোবর’২৩ : বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে লুপ্তপ্রায় রেডিওর ব্যবহার। প্রবীণ মানুষদের অনেকের ছোটবেলা ও নব যৌবনের অনেকটা কেটেছে রেডিও শুনে। বাড়িতে রেডিও শোনার চল ছিল। অনেকে আবার পাশের বাড়িতে গিয়েও রেডিও শুনতা। সেগুলো এখন ইতিহাস। তবে দেবিপক্ষ মহালয়া আসতেই রেডিওর স্মৃতি জ্বল জ্বল করে ওঠে রেডিও মিস্ত্রিদের সামনে। মালদা শহরের খোকন সাহা পেশায় ছিলেন রেডিও মিস্ত্রি।

সেই অর্থেই এখন আর রেডিও সারাইয়ের কাজ করেন না। এক সময় এই মহালয়ার সময় মাস খানেক আগে থেকে নাওয়া-খাওয়া ভুলে যেতে হত। তিনি জানান, ষাট-সত্তর দশকের দিকে তখন নেতাজি মোড়ে রেডিও সারাইয়ের দোকান বলতে বীণাপাণি মিউজিক মার্ট, রেডিও ইলেকট্রনিক্স কর্পোরেশন, তারবেতার ও বেতারবাণী এবং খোকনবাবুদের দোকানটি। এখনও সে-সব দিনের কথা ভুলতে পারেন না খোকনবাবু। মনটা অস্থির হয়ে উঠলেই নিয়ে বসেন ৯০ ভোল্ট ব্যাটারির ড্রাইসেট রেডিও কিংবা ৭০ বছরেরও পুরনো ভাল্ব সেট রেডিও।

ট্রান্সিজিসটার রেডিও রকমারি সম্ভার রয়েছে তাঁর কাছে। তাঁর বাড়িখানাই যেন একটি সংগ্রহশালায় পরিণত হয়েছে। মহালয়ার আগে অভ্যেস বসত এখনও পুরনো রেডিও নিয়ে সারাইয়ের কাজে বসে পড়েন তিনি। তাঁর সংগ্রহে এইচএমভি ছাড়াও ফিলিপস, টেলিফাঙ্কান, মুরার্ড, জিইসি, এইচজিইসি-সহ বেশ কিছু রেডিও রয়েছে। তিনি আরো জানান দাদা স্বর্গীয় বিমলকুমার সাহা-র কাছে রেডিও মেরামতির হাতে খড়ি। এক সময় মহালয়ার আগে রেডিও মেরামতির জন্য আমাদের দোকানে ভিড় পড়ে যেত। লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতেন তাঁরা। কাজের চাপ ছিল, পুজোর আগে বেশ আনন্দও পেতাম। সেই আনন্দের কথা এখন মনে পড়লে দুঃখ পাই। যদিও মহালয়ার সকালে তিনি নিজের হাতে তৈরি পুরনো টেপ রেকর্ডারে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের গলায় মহালয়া শুনতে ভালবাসেন। এদিন সেটিও ঝাড়পোছ করতে দেখা গেল তাঁকে। তিনি বলেন, বর্তমানে বিক্রি হয়না রেডিও।