সংবাদদাতা, জলপাইগুড়ি, ১৯ নভেম্বর’২৩ : তিস্তা নদী বিপন্ন। সম্পূর্ণ অবৈজ্ঞানিক ভাবে তিস্তা নদীর উপর একের পর এক বাঁধ নির্মাণ, ব্যারেজ তৈরী, জলবিদ্যুৎ প্রকল্প তৈরীর মধ্য দিয়ে উত্তরবঙ্গের লাইফ লাইন “তিস্তা” নদীকে ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

এই তিস্তাকে বাঁচানোর জন্য জলপাইগুড়ি শহরের অন্যতম নাগরিক সংগঠন ‘অভিমুখ’ নানা ধরনের আন্দোলন কর্মসূচি পালন করে আসছে। বিপন্ন তিস্তাকে রক্ষা করবার জন্য গণ আন্দোলন তৈরীর লক্ষ্যে ইতিমধ্যেই জলপাইগুড়ি শহর ও আলিপুরদুয়ারে নাগরিক কনভেনশন সংগঠিত করেছে। সেই সূত্র ধরে আজ জলপাইগুড়ি শহরের প্রাণকেন্দ্র কদমতলায় দাবীর স্বপক্ষে স্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযান ও লিফলেট বিলি করা হয়।

তিস্তা নদীর উপর সমস্ত নির্মাণ কাজ সত্ত্বর বন্ধ করতে হবে, নতুন করে কোনো বাঁধ তৈরী করা যাবে না, পরিবেশগত নাগরিক হিসেবে তিস্তার অধিকার সুনিশ্চিত করতে হবে, বিধিবদ্ধ ‘তিস্তা অববাহিকা উন্নয়ন বোর্ড’ তৈরী করা সহ আজ পর্যন্ত তিস্তার উপর সমস্ত নির্মাণ কাজের পরিবেশগত ও সামাজিক মূল্যায়ন করা ইত্যাদি দাবী পথ চলতি সাধারণ মানুষকে বুঝিয়ে অভিমুখের সদস্যরা দাবী পত্রে স্বাক্ষর করিয়েছেন। সাধারণ মানুষ অত্যন্ত কৌতুহলী হয়ে এই দাবী গুলোর কথা শুনছেন। এর সাথে সাথে বঙ্গীয় ভূগোল মঞ্চের সাথে অভিমুখ যৌথ উদ্যোগে আগামী ২৬ শে নভেম্বর স্থানীয় স্টুডেন্ট হেলথ হোম প্রেক্ষাগৃহে জলপাইগুড়ি শহরের মাঝখান দিয়ে বয়ে যাওয়া ‘করলা’ নদীকে নিয়ে নাগরিক কনভেনশনের ও প্রচার করেন।

তিস্তা ও করলা নদীকে নিয়ে জলপাইগুড়ির মানুষের আবেগ জড়িয়ে আছে, সেই আবেগের প্রতিফলন আজ স্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযানে চোখে পড়েছে। অভিমুখের পক্ষে প্রশান্ত নাথ চৌধুরী বলেন, “গত ৪ঠা অক্টোবরে সিকিমে তিস্তা নদীর ভয়াবহ বিপর্যয় থেকে আমাদের সকলের শিক্ষা নিতে হবে। ” আগামীতে জলপাইগুড়ি জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজার হাজার মানুষের এই সমস্ত দাবীর সমর্থনে স্বাক্ষর সংগ্রহ করার মধ্য দিয়ে নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের জলসম্পদ মন্ত্রক ও রাজ্য সরকারের সেচ দপ্তরের কাছে দাবী আকারে সংগঠিতভাবে রাখা হবে বলে অভিমুখের অন্যতম সদস্য সুকল্যাণ ভট্টাচার্য জানান।

জলপাইগুড়ির অন্যতম বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ত্ব উমেশ শর্মা, গৌতম গুহ রায়, অধ্যাপক রূপন সরকার, ডালিয়া রায় চৌধুরী, পার্থ ব্যানার্জীরা আজকের স্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযানে অংশগ্রহণ করেন।