অরুন কুমার : কৃষি হলো ভারতের বৃহত্তম অর্থনৈতিক ভিত্তি, এ নিয়ে সন্দেহ নেই। ভারতীয় জনসংখ্যার একটা বড় অংশই কৃষির উপর নির্ভরশীল এবং GDP বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে দেশের কৃষিব্যবস্থার। হরিয়ানা, পাঞ্জাব এবং উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখান্ড হিমাচল, সহ উত্তর ভারতে ব্যাপক অংশ কৃষিকাজের উপরই নির্ভরশীল। তবে এই হিন্দিবলয় ছাড়াও বেশ কিছু অঞ্চল রয়েছে যাদের অর্থনীতি বেশিরভাগই কৃষির উপর নির্ভরশীল। তেমনই একটি রাজ্য জম্মু এবং কাশ্মীর। জম্মু ও কাশ্মীর নিয়ে কথা উঠলেই এর অর্থনীতির মূলে চলে আসে পর্যটন শিল্প । কিন্তু এই রাজ্যের জনসংখ্যার ৭০ শতাংশই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কৃষির সঙ্গে যুক্ত বলেই জানিয়েছে কৃষি জাগরণ।

কাশ্মীর উপত্যকা উদ্যান এবং রেশম চাষে সমৃদ্ধ। বিভিন্ন ফল, সবজি এবং বাদাম বাগানের আধিক্য চোখে পড়বে এই রাজ্যটিতে। শীতল জলবায়ু এবং মাটির গুণমান ভালো হওয়ার জন্য সেরা মানের আপেল, চেরি, পীচ, নাশপাতি এবং চাল ও বার্লির মতো শস্য সরবরাহ করে ভূস্বর্গ জম্মু ও কাশ্মীর অর্থাৎ J&K। কাশ্মীরি বাদাম বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়। দেশে উৎপাদিত অধিকাংশ ফসল, ফল ও সবজি জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে রপ্তানি করা হয়। এছাড়াও পোশাকের অন্যতম বিখ্যাত এবং ব্যয়বহুল পণ্য, পশমিনাও এই রাজ্যেই তৈরি হয়। হালকা অথচ উষ্ণ পশমিনা শাল এবং স্যুট তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। বাজারে উন্নতমানের এক মিটার পশমিনার দাম হাজার টাকা। সীমান্তের ওপারেও এই পশমিনা রপ্তানি হয়। জম্মু ও কাশ্মীরের কম্বল এবং হস্তশিল্পও বিখ্যাত। কৃষির ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়েই সরকার কৃষি ও কৃষকদের উন্নতির জন্য বেশ কিছু প্রকল্পও নিয়েছে। সরকার রাজ্যের কাস্টম হায়ারিং সেক্টর এবং ফার্ম মেশিনারি ব্যাঙ্ক প্রসারের পরিকল্পনাও করছে৷ এটা উল্লেখ করার মতো বিষয়। এছাড়াও বলতে হয় যে ভারতে সবচেয়ে বেশি জাফরান উৎপাদন হয় এই রাজ্যেই। গত বছর, ভারত সরকার জাফরানের গুণমান বাড়াতে এবং একে বিশ্বের অন্যতম সেরা জাফরান করে তুলতে রাজ্যে জিআই ট্যাগিং এবং প্রক্রিয়াকরণের নতুন কৌশল চালু করেছে। একটি জাফরান পার্কও স্থাপন করা হয়েছে। সঠিক বিনিয়োগ এবং উদ্যোগের মাধ্যমে ভারতের অর্থনীতিতে কাশ্মীরের কৃষিক্ষেত্রের ভূমিকা আগামীতে আরও বাড়তে পারে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। জম্মু-কাশ্মীর ছাড়াও উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলির কৃষি চিত্র যথেষ্ট সমৃদ্ধ সেখানকার উৎপাদিত ফসল যার সুনাম রয়েছে।

এবার কথা প্রসঙ্গে আসছি আমাদের উত্তরবঙ্গের কৃষি বৈচিত্র্যের দিকে। এই অঞ্চলের কৃষি বৈচিত্র্যের অন্যতম একটা কারণ হল প্রাকৃতিক দিক থেকে নদী সমৃদ্ধ ও বৈচিত্র্য ভরা এই অঞ্চল এখানকার মাটিকে সমৃদ্ধ করেছে। আর সেই কারণেই এখানে নানান ধরনের কৃষি পণ্য উৎপাদিত করে থাকে চিরাচরিত কৃষি পণ্যসামগ্রীর বাইরেও। একটি বিষয়ে স্বীকার করতে হবে যে কৃষি উৎপাদন এবং কৃষির বিভিন্ন ধরনের ফসল বা একটু অন্য ধরনের ফসল যেগুলো অচিরাচরিত ফসল দেখা যায় সেটা হচ্ছে যে ড্রাগণ ফ্রুটস, রাসবেরি জাতীয় ফল চাষ বিভিন্ন জায়গায় নানাভাবে হয়ে চলেছে এবং এটা একটা নজিরও তৈরি হয়েছে । এক্ষেত্রে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোফাম বিশেষ ভূমিকা পালন করে চলেছে। এই ধরনের যারা ফল, কৃষি পন্য উদ্যান জাতীয় কৃষি পণ্য সামগ্রী উৎপাদন করছেন আগ্রহী ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে এটা খুব ভালো লক্ষণ।কোফাম এর ভূমিকা সৃজনশীল গঠনমূলক এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। তারা প্রশিক্ষণ দিয়ে সমৃদ্ধ করছেন এবং বর্তমানে এই ‘চাষি’ শব্দটি ব্যবহার না করে ‘উৎপাদক’ এই শব্দটির প্রচলন বাড়ছে বলা হয়ে থাকে এই শব্দটা ব্যবহার করা হয়ে থাকে তারা যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী হয়ে এই কাজগুলো করছে এটা খুব ভালো লক্ষণ।
এর পাশাপাশি যেটা দেখা যাচ্ছে যে জৈব উৎপাদিত যে সমস্ত ফসল ফল এগুলোর কিন্তু বেশ চাহিদা বাড়ছে এবং সেই চাহিদা যেমন বাড়ছে সেই সঙ্গে যারা উৎপাদক তারাও কিন্তু উৎপাদন তাকে যাতে একটু বৃদ্ধি করা যায় সেদিকেও নজর দিচ্ছে এটাও কিন্তু আমাদের উত্তরবঙ্গের ক্ষেত্রে একটা খুব ভালো লক্ষণ।
এর বাহিরেও বিভিন্ন ধরনের মেডিসিনাল প্লান্টস ফুল চাষ এক্ষেত্রে অনেকের সাফল্য অর্জন করেছে এগুলো খুব কৃতিত্বের বিষয় এবং যখন আমরা দেখি যে হর্টিকালচার মেলা হচ্ছে তখন সেখানে প্রতি প্রদর্শিত কৃষি উৎপাদকদের বিভিন্ন ফসল সত্যিই অবাক করে দেওয়ার মত।
এই ছবি আমরা দেখতে পাই এটা খুবই ভালো লক্ষণ কিন্তু এই বিষয়গুলি যত লোকসমক্ষে বেশি বেশি করে তুলে ধরার প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু এখনো সেটা তুলনামূলকভাবে কম রয়েছে আর এ ক্ষেত্রে সব থেকে বড় ভূমিকা রয়েছে যারা লেখালেখি সঙ্গে যুক্ত সাংবাদিকতার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন তারা বিষয়টিকে বিভিন্নভাবে তুলে ধরতে পারেন।
এভাবেই আমাদের দেশের বিভিন্ন রাজ্যের যে কৃষি বলে তার কিছু কিছু চিত্র তুলে যেটা বলতে চাইছে আগামী দিনে আমাদের উত্তরবঙ্গের এই অঞ্চল কিন্তু একটার রোল মডেল রূপে গড়ে উঠতে পারে সম্মিলিত প্রয়াসে এ ব্যাপারে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে এ ব্যাপারে চিন্তাভাবনার মাধ্যমে আশা করি এটা বাস্তব সম্ভব হবে শুধু প্রয়োজন আন্তরিকতা এবং বাস্তব রূপায়নের এবং সদিচ্ছা এগুলো খুব জরুরী।
দ্বিতীয়ত হচ্ছে বিষয় যে এই যে প্রশিক্ষণের যে বিষয়টা রয়েছে অর্থাৎ যারা প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন বিভিন্ন সংস্থার ভূমিকা সম্পর্কে এবং তাদের ভূমিকা কে আরো বেশি করে তুলে ধরার প্রয়াস প্রয়োজন। তৃতীয়তঃ এ ব্যাপারে আগ্রহী মহিলা উৎপাদকের ভূমিকাও এটা অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য দিক। মহিলাদের সংঘর গোষ্ঠী বা সেল্ফ হেল্প গ্রুপ এ ক্ষেত্রে যথেষ্ট গঠনমূলক ভূমিকা পালন করে চলেছে এদের সম্পর্কেও আরো প্রচার ও প্রসার হওয়া দরকার।
আগামী দিনে কৃষি পর্যটনের ক্ষেত্রে আমাদের উত্তরবঙ্গ “নতুন মডেল” উঠে আসতে পারে। বিষয়টা এরকম তো যারা পর্যটন ক্ষেত্রে বেড়াতে আসেন এই অঞ্চলে তারা কৃষি অঞ্চল রয়েছে যে জায়গায় রয়েছে অনেক ফার্ম রয়েছে অনেক সাফল্য অর্জন করেছেন বেশ কিছু উৎপাদক কৃষক এই ফরমুলা এই ফার্মগুলোকে একটা ডেস্টিনেশন রূপে দেখা যেতে পারে পর্যটনের ক্ষেত্রে কৃষি পর্যটনের ক্ষেত্রে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই আজকের ডিজিটাল গনমাধ্যমের যুগ সে ক্ষেত্রে অডিও ভিসুয়াল বা ভিডিও কন্টেন্ট তৈরি করে সোশ্যাল মিডিয়া সাইটগুলিতে দেওয়া যেতে পারে। আর এইভাবে একটা জনপ্রিয় হতে পারে এই উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন এলাকা কৃষি পর্যটনের ক্ষেত্রে বলে আমার অভিমত।