সংবাদদাতা, জলপাইগুড়ি : জলপাইগুড়ির সবচেয়ে বড় গৌরীয় মঠের জগন্নাথদেবের বিশালাকৃতি রথ ঘুরলো শহরে। সাথে ছিল অস়ংখ্য ভক্তদের ভিড়। রথকে কেন্দ্র করে পুলিশের নজরদারিও ছিল এদিন।

ঋতু চক্রে গরমের পর বর্ষার আগমন। আষাঢ় মাসে শ্রী শ্রী জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা এই মাসের প্রধান উৎসব। রথযাত্রা কে কেন্দ্র করে ভারতের বিভিন্ন জায়গায় মেলা ও উৎসবের আয়োজন হয়ে থাকে। রথ যাত্রার অপর নাম গুন্ডিচা যাত্রা বা রথ ঘোষ যাত্রা। আষাঢ়ের শুক্লা দ্বিতীয়া থেকে দশমী পর্যন্ত নয় দিনের পুরীর রথ যাত্রা বিশ্ব প্রসিদ্ধ।

ভগবান জগন্নাথ দেবের দ্বাদশ মাত্রার মধ্যে গুন্ডিচা যাত্রা প্রধান। জগন্নাথ দেবের রথযাত্রাতে জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রার খর্বাকৃতি মূর্তি থাকে। কথিত আছে রথের দড়ি ধরলে মহাপুণ্য লাভ হয়। মঙ্গলবার গোটা দেশের সাথে জলপাইগুড়ির গৌড়ীয় মঠে রথযাত্রা উৎসব উদযাপিত হয়।

রথযাত্রায় জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রা ও সুদর্শন বিগ্রহ গৌড়ীয় মঠ থেকে নিয়ে সুসজ্জিত রথ শহরের বিভিন্ন পথ পরিক্রমা করে এবং ভক্তদের দর্শন দেন। দূরদূরান্ত থেকে ভক্তরা এই রথ দেখতে আসেন। ভক্তরা শ্রী শ্রী জগন্নাথ দেবের রথের সামনে জল দিয়ে রাস্তা পরিস্কার করে দেয়। রথে দেখা যায় জলপাইগুড়ির বিজেপি সাংসদ ডাঃ জয়ন্ত কুমার রায়কে।

তারপর জগন্নাথ দেবের রথ সেই পথ দিয়ে এগিয়ে যায়। যা দেখতে মানুষের ঢল নামে এদিন। সেই সঙ্গে সমানতালে বাজতে থাকে শঙ্খ , ঘন্টা, কাঁসা, ঢাক, ঢোল ও উলুধ্বনি এবং পাঠ- কীর্তন। ভক্তবৃন্দরা ভক্তি সহকারে রথকে টেনে এগিয়ে নিয়ে যায়।

রথ থেকে রাস্তায় দাড়িয়ে থাকা দর্শনার্থীদের দেওয়া হয় প্রসাদ। রথ পুরাতন পুলিশ লাইনের গৌড়ীয় মঠ থেকে বেড়িয়ে শহরের বিভিন্ন পথ ঘুরে বিকেলে যোগমায়া কালীবাড়িতে অবস্থান করবে।

রথযাত্রা উপলক্ষে এদিন জেলা পুলিশের তরফে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। উল্লেখ্য আটদিন মাসির বাড়ি অথাৎ যোগমায়া কালীবাড়িতে বিগ্রহ অবস্থান এবং চলবে পূজো অর্চনা।

জলপাইগুড়িতে অন্যান্য রথ যাত্রার পাশাপাশি এদিন জলপাইগুড়ির টেম্পল স্ট্রিট এলাকার লক্ষীনারায়ণ মন্দিরের পক্ষ থেকে শ্রী শ্রী জগন্নাথদের রথ যাত্রার সুচনা হয়। এদিন লক্ষীনারায়ণ মন্দির থেকে ছোট রথ বের হয়ে থানা মোড় হয়ে সমাজপাড়া হয়ে শহরের বিভিন্ন পথ পরিক্রমা করে এবং ভক্তদের দর্শন দেন।

ভক্তরা ভক্তি সহকারে রথকে টেনে এগিয়ে নিয়ে যায়। রথ থেকে রাস্তায় দাড়িয়ে থাকা দর্শনার্থীদের দেওয়া হয় প্রসাদ। শহরের বিভিন্ন পথঘুরে বিকেলে রথ আবার লক্ষীনারায়ণ মন্দিরে এসে অবস্থান করে। পূর্ণ লাভের আশায় রথের রসি টানতে ভক্তদের হিড়িক পড়ে যায়।