
সংবাদদাতা, জলপাইগুড়ি : দুই সৎ মেয়ে পিঙ্কি ও রিঙ্কির সাথে জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের জমিদার পাড়ায় থাকতেন বছর ৫৫ র লক্ষী মাঝি। স্বামী অশোক মাঝি মারা যাওয়ার পর দুই সৎ মেয়ে তাকে এই বাড়িতে নিয়ে আসে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। প্রতিবেশীদের বক্তব্য, লক্ষী মাঝির সাথে সৎ মেয়ে পিঙ্কি মাঝির সম্পর্ক একদমই ভালো ছিল না। মাঝেমধ্যেই বৃদ্ধাকে মারধর করা হতো বলে অভিযোগ।

পাশাপাশি বিভিন্ন সময় তাকে ঘরে বন্ধ করে বাড়ি থেকে চলে যেত বলেও দাবি। গত প্রায় ৭/৮ দিন ধরে প্রতিবেশীরা লক্ষি মাঝিকে বাড়িতে দেখতে পাচ্ছিলেন না। এরই মধ্যে দুদিন ধরে ওই বাড়ি থেকে দুর্গন্ধ ছড়াতে থাকে এলাকায়। সন্দেহ হওয়ায় স্থানীয়দের সাথে কথা বলে বৃহস্পতিবার জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানায় বিষয়টি জানান পাহাড়পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান বেণুরঞ্জন সরকার।

শুক্রবার পুলিশ পিঙ্কি মাঝির বাড়িতে যায়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি জানান, মা অসুস্থ হয়ে মারা গিয়েছিল। তিনি কি করবেন বুঝে উঠতে না পেরে মা’কে বাড়িতেই মাটি খুঁড়ে কবর দিয়ে দেন। এরপর পুলিশ ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে কবর থেকে মৃতার মৃতদেহ উদ্ধার করে। আটক করা হয়েছে পিঙ্কি মাঝিকে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার পুলিশ। স্থানীয়দের অভিযোগ, মাকে মেরে মেয়ে পুঁতে রেখেছিল।

পাহাড়পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান বেণুরঞ্জন সরকার জানান, পিঙ্কি মাঝি প্রথমে তাদের বলে যে মা কোথায় চলে গেছে তা ওরা জানে না। এরপর পুলিশকে দেখে জানায় মার মৃত্যুর পর সে মাকে বাড়িতেই কবর দিয়ে দিয়েছে। তিনি আরো বলেন, তাদের প্রাথমিক অনুমান মাকে মেরে দুই বোন কবর দিয়ে দিয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা চিরঞ্জীৎ সরকার বলেন, প্রায়ই দুই মেয়ে মায়ের ওপর অত্যাচার করত, সেই চিৎকার চেঁচামেচি শোনা যেত। কিন্তু ৭/৮ দিন ধরে মৃতা লক্ষী মাঝিকে প্রতিবেশীরা দেখতে পাচ্ছিলেন না এবং সেই সাথে চিৎকার চেঁচামেচির আওয়াজও আসছিল না। এরপর ওই বাড়ি থেকে দুর্গন্ধ আসছিল। এতে তাদের সন্দেহ হয় এবং তার প্রশাসনকে তাদের সন্দেহর কথা জানান।

সদর পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য অসীম রায় জানান, বাড়িতে ঢুকে বাউন্ডারির পাশে কবরের মত গর্ত দেখে সন্দেহ হয়। এরপর মেয়ে পিঙ্কি মাঝি এসে পুলিশকে জানায় ওই গর্তেই তার মাকে কবর দিয়েছে সে।

পাহাড়পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের পঞ্চায়েত সদস্য বিকাশ বসাক বলেন, কিভাবে মারা গেছেন লক্ষী মাঝি সেটা পুলিশের তদন্ত হলেই জানা যাবে।