লেখক : পিনাকী রঞ্জন পাল
নিঃশব্দ দুপুরবেলা, জলপাইগুড়ি শহরের সেই ছোট্ট, চেনা বাড়ির জানলার পাশে চুপ করে বসে আছে রণ। তার চোখের সামনে উদার আকাশ বিস্তৃত, যেন তারই মতো নীরবতা আর শূন্যতাকে আঁকড়ে ধরে আছে। পাঁচ বছর আগে ঘটে যাওয়া সেই ভয়াবহ দুর্ঘটনার কথা মনে পড়তেই রণের বুকের ভেতর এক গভীর ব্যথা চেপে বসে। যেটুকু জীবন এখনো তার আছে, সেটুকু যেন কেবল হুইল চেয়ারের চারপাশে বন্দি।
রণ মনে পড়ে, তখন তার বয়স ছিল উনিশ। জলপাইগুড়ির একটি কলেজে পড়ত, সবে মাত্র দ্বিতীয় বর্ষে উঠেছে। সাইকেল ছিল তার প্রিয় সঙ্গী। বন্ধুরা প্রায়ই বলত, “রণ, তুই তো সাইকেল চালাতে ভালোবাসিস, কিন্তু এত দ্রুত চালাস কেন?” সে হাসি দিয়ে উত্তর দিত, “জীবন তো ছোট, তাই সময় নষ্ট করতে চাই না।” কিন্তু নিয়তির কঠোর পরিহাস যে এভাবেই তাকে থমকে দেবে, তা কি কখনো ভেবেছিল সে?
সেই দিনটার কথা স্পষ্ট মনে পড়ে। কলেজ থেকে ফিরছিল, হঠাৎ রাস্তায় এক বড় গাড়ির সঙ্গে তার সাইকেলের মুখোমুখি ধাক্কা। চারপাশে যেন সবকিছু এক মুহূর্তে থমকে গিয়েছিল। চোখের সামনে সব অন্ধকার হয়ে এসেছিল, আর যখন সে জ্ঞান ফিরে পায়, দেখে হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে আছে। তার পরিবার, বন্ধু-বান্ধব সবাই তাকে ঘিরে দাঁড়িয়ে, কাঁদছে। ডাক্তারের কথাগুলো এখনো তার কানে বাজে — “রণ, তোমার কোমরের নিচের অংশটা আর কখনো সাড়া দেবে না।”
আরো পড়ুন : একটি শিক্ষণীয় গল্প : ভাগ্যের সন্ধানে
প্রথমে সে কিছুই বুঝতে পারছিল না। নিজের শরীরকে সে নিজের বলে আর অনুভব করতে পারছিল না। ধীরে ধীরে বুঝল, সে আর আগের মতো হাঁটতে পারবে না, আগের মতো বন্ধুদের সঙ্গে মাঠে দৌড়াবে না। কলেজে যাওয়াও বন্ধ হয়ে গেল। বন্ধুরা শুরুতে তাকে দেখতে আসত, তাকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করত। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তারাও ধীরে ধীরে দূরে সরে গেল। আর রণও নিজের মতো করে একা হয়ে গেল।
সেই একা হয়ে যাওয়া জীবনটা যেন তার কাছে এখন শুধুই স্মৃতি। তার মন ভেসে যায় সেই দিনগুলোর দিকে, যখন তার চারপাশে সবকিছু ছিল প্রাণোচ্ছ্বল। বাইরের এই বিশাল পৃথিবীটা তার জন্য ছিল ভীষণ ছোট, সহজলভ্য। জলপাইগুড়ির রাস্তা, ছোট্ট বাজার, কলেজের ক্যাম্পাস – সব যেন তার নিজের দখলে ছিল। বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে দুপুরের আড্ডা, সাইকেল নিয়ে ঘুরতে বের হওয়া, পার্টির মজা – এসবই যেন তখন তার জীবনের অপরিহার্য অংশ ছিল।
কিন্তু দুর্ঘটনার পর, চারপাশের সেই ব্যস্ত দুনিয়া ধীরে ধীরে তার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল। তার জীবন থেকে যেন এক এক করে সবকিছু সরে যেতে লাগল, তার সেই চেনা মুখগুলোও। হুইল চেয়ারে বসে সে এখন শুধু জানলার বাইরে তাকিয়ে থাকে, যেমন এখন তাকিয়ে আছে, আর দূরের আকাশটাকে দেখে মনে মনে ভাবে, এ আকাশের তলায় সে যেন শুধুই একজন নির্বাক দর্শক, আর কিছু নয়।
ভোরের আলো আসতেই রণ অনুভব করল আজকের দিনটা যেন অন্যরকম। আজ ভাইফোঁটা, আর এদিন এলেই তার মনে ছোটবেলার স্মৃতিগুলো গাঢ় হয়ে ওঠে। অতীতের সেই দিনগুলোর কথা মনে পড়ে রণের—সেই দিনগুলোতে ভাইফোঁটা মানেই ছিল এক অনন্য আনন্দ। তার দুই প্রিয় দিদি—মুনমুন আর স্বর্ণালী—তাকে নিয়ে কেমন যেন উৎসবের পরিবেশ তৈরি করত।
আরো পড়ুন : ঝড়ের গল্প : আশার আলেয়া
মুনমুন, বড় দিদি, এখন দিল্লিতে। বিবাহিত জীবনে সে ব্যস্ত, নিজের সংসার, ছেলে-মেয়েদের নিয়ে তার সময় কাটে। ছোট দিদি স্বর্ণালী থাকে বেঙ্গালুরুতে। সেও নিজের সংসারে ব্যস্ত। রণ জানে, বোনেরা চাইলেও এখন আর তার কাছে ভাইফোঁটার জন্য আসতে পারে না। সে নিজেও এখন আর আগের মতো নেই, হুইল চেয়ারের গণ্ডিতে আটকে গেছে তার জীবন। তাই ভাইফোঁটার দিনে বোনেদের কাছে যাওয়া, বা তাদের কাছে এসে ফোঁটা নেওয়া – দুটোই এখন প্রায় অসম্ভব।
কিন্তু এসব বাধা সত্ত্বেও, রণের মন যেন সব বাধা ভেঙে প্রতিবারই সেই ফেলে আসা দিনগুলোর কাছে ফিরে যায়। তার মনে পড়ে সেই মিষ্টি সকালে, মায়ের রান্নাঘরে সাজানো পায়েস আর মিষ্টির প্লেট। মা নিজে হাতে সব কিছু সাজিয়ে দিতেন, যেন এ দিনটা খুব স্পেশাল। ছোটবেলায় ভাইফোঁটা এলেই সকাল থেকে এক অদ্ভুত আনন্দে ভরে উঠত তাদের বাড়ি। মুনমুন আর স্বর্ণালী মিলে তার কপালে ফোঁটা দেওয়ার আগেই তাকে ঘিরে ধরে হাসি-ঠাট্টায় মাতত।
রণ মনে করে, বোনেরা ফোঁটা দেওয়ার সময় কেমন করে তার চোখের দিকে তাকিয়ে হাসত। মুনমুন বলত, “দেখিস, এ বার তোর ফোঁটা আরও লাল হবে, কড়া হবে, তুই আরও বুদ্ধিমান হবি।” আর ছোট্ট রণ সেসব শুনে গম্ভীর মুখে সব শুনত, যেন সে সত্যিই সেসব মন্ত্রমুগ্ধের মতো বিশ্বাস করে। এরপর তারা একসঙ্গে মিষ্টি খেত, রণের জন্য সাজানো থালায় পায়েস, লাড্ডু আর সন্দেশ থাকত।
আরো পড়ুন : গল্পের নাম : সাজের আড়ালে
তারপর একে একে বোনেরা তার কপালে ফোঁটা পরিয়ে, তার গালে এক চিমটি বসিয়ে, আনন্দে মেতে উঠত। মাঝে মাঝে তার দিদিরা তাকে খোঁচা দিত, “তুই কিন্তু আমাদের খুশির জন্য কত বড় বলি দিচ্ছিস জানিস!” এসব শুনে ছোট্ট রণ লজ্জায় লাল হয়ে যেত। অথচ সেও জানত, এই ছোট ছোট খুনসুটির মাঝে কত বড় ভালোবাসা লুকিয়ে আছে।
সেই দিনগুলোতে তাদের বাড়িটা যেন একটা ছোট্ট, সুখের দুনিয়া ছিল, যেখানে শুধুই হাসি আর আনন্দ। বড় হয়ে সবাই যে যার জীবনে ব্যস্ত হয়ে পড়বে, দূরে চলে যাবে – তখন এসব কিছুই বুঝতে পারেনি রণ। আজ ভাইফোঁটা এলে সেই অতীতের ছবিগুলো আবার তার মনের ক্যানভাসে ফিরে আসে। কেমন যেন একটা শূন্যতা অনুভব করে সে। জানে, মুনমুন আর স্বর্ণালী তাকে আগের মতোই ভালোবাসে, কিন্তু সময় আর দূরত্ব আজ সেই ভালোবাসাকে ছুঁয়ে আসতে দেয় না।
ঘরের চারপাশে নেমে আসা নীরবতার মাঝেই রণের মা-বাবা নিরবে বসে আছেন। আজ ভাইফোঁটা, অথচ এই ঘরটি যেন কতটা ফাঁকা আর নিস্তব্ধ। কিছু বছর আগেও ঠিক এমনই দিনে তাদের বাড়িটা হাসি-আনন্দে ভরে উঠত, মুনমুন আর স্বর্ণালী তাদের ভাইকে ফোঁটা দিত। বাড়ির প্রতিটি কোনা যেন তখন কথা বলত। রণের মা-বাবা চোখের সামনেই দেখতে পেতেন, তাদের ছোট্ট ছেলেটা কেমন হাসিখুশি আর চঞ্চল। অথচ সেইসব দিন আজ যেন শুধুই স্মৃতির জগতে বন্দি।
মায়ের মন অস্থির হয়ে ওঠে। তিনি বারবার মুনমুন আর স্বর্ণালীকে বলেছিলেন, “তোরা যদি একটু আসতে পারতি! অন্তত এই বিশেষ দিনটাতে তো রণের পাশে থাক।” কিন্তু বাস্তবতা সবসময় ইচ্ছের সঙ্গে মিল খায় না। মুনমুনের দুটো ছোট্ট মেয়ে, তাদের স্কুলের পরীক্ষা আর পড়াশোনা নিয়ে মুনমুনের সারা দিনটাই ব্যস্ত। স্বর্ণালীরও এক ছোট্ট ছেলে, সেও বেঙ্গালুরুতে সংসার আর ছেলের দায়িত্ব নিয়ে ব্যস্ত। তাই দু’জনেরই পক্ষে এই সময়ে এতদূরে আসা প্রায় অসম্ভব।
মা-বাবা মুখে কিছু বলেন না, তবে তাদের চাপা দুঃখটা বুঝতে পারে রণ। একে তো নিজের জীবনের এই পরিস্থিতি, তার উপর দুই দিদিকে না দেখতে পাওয়ার কষ্ট, আর তার মা-বাবার বিষণ্ণ মুখ। এইসব ভাবতে ভাবতে হঠাৎ রণের মনে একটা চিন্তা আসে। তার চোখের কোনায় হাসির ঝিলিক খেলে যায়। সে তাড়াতাড়ি মোবাইল ফোনটা হাতে তুলে নেয়। ছোটবেলার সেই খুশির দিনগুলো যেন চোখের সামনে একে একে ভেসে ওঠে।
আরো পড়ুন : মজার গল্প : বুড়ো পঞ্চুর বিয়ে
রণ ফোন খুলে মুনমুন আর স্বর্ণালীর নাম খুঁজে নিয়ে ভিডিও কল দিল। ফোন রিসিভ হতেই দুই দিক থেকে চেনা উচ্ছ্বসিত কণ্ঠস্বর ভেসে এল, “রণ! কেমন আছিস?” তাদের গলায় যেন ভাইফোঁটার সেই পুরনো দিনের উচ্ছ্বাস এখনো লেগে আছে। তাদের চেহারায় অনেক পরিবর্তন এসেছে, কিন্তু ভাইকে নিয়ে সেই ভালোবাসা আজও একই রকম।
রণ হাসি দিয়ে বলল, “আচ্ছা, আজ ভাইফোঁটা, তোরা না আসতে পারলেও, আমি তোদের কাছে এসেছি!” মুনমুন আর স্বর্ণালীর চোখে এক অদ্ভুত খুশি আর আবেগের ঝিলিক ফুটে উঠল। পর্দার ওপার থেকে তারাও যেন অনুভব করল, আজকের এই ছোট্ট ফোনকলের মধ্যেই লুকিয়ে আছে সেই ছোটবেলার ভাইফোঁটার আনন্দ।
একে একে তাদের মধ্যে কথোপকথন শুরু হলো, যেন বছরগুলো পেরিয়ে আবার ফিরে এসেছে সেই পুরনো সময়। রণ মুনমুনকে বলল, “তুই তো আমাকে বলতিস, ফোঁটা পরলে আমি বুদ্ধিমান হবো! দেখিস, আজও আমি তোর সেই কথাগুলো মনে রেখেছি!” আর এ কথা শুনে স্বর্ণালী বলল, “এই রণ, তোকে একটা ভার্চুয়াল ফোঁটা দিই। আর তুই প্রতিবারের মতো মিষ্টি খেয়ে নে!” তিনজনের মুখেই হাসির রেশ, তবে সেই হাসির ভেতর এক ধরনের কষ্ট লুকিয়ে ছিল, যা তারা কাউকে দেখাতে চাইছিল না।
এই ভিডিও কলে যেন তাদের জীবনের সব ফাঁকা জায়গাগুলো এক মুহূর্তে পূর্ণ হয়ে উঠল। রণ, মুনমুন আর স্বর্ণালী সবাই অনুভব করল, দূরত্ব আর সময় তাদের ভালোবাসাকে আটকাতে পারে না। তারা হয়তো একসঙ্গে নেই, কিন্তু এই ভিডিও কলেই যেন তাদের হৃদয়ের প্রতিটি স্পন্দন একসূত্রে বাঁধা।
রণ মৃদু হাসি নিয়ে দুই বোনকে বলল, “আছি তো! আজ তো ভাইফোঁটা, তোরা আসতে পারছিস না, তাই ভাবলাম তোদের সাথে একটু কথা বলি।” এই কথায় ওপাশে মুনমুন আর স্বর্ণালী কিছুক্ষণ চুপ হয়ে গেল। ছোটবেলার সেই আনন্দঘন ভাইফোঁটার দিনগুলো আজ শুধু স্মৃতি হয়ে রয়ে গেছে। তারা দু’জনেই অনুভব করল, প্রতি ভাইফোঁটার দিনেই তাদের মনের গভীরে ভাইয়ের কাছে আসতে না পারার এক অসহায়তা বাসা বাঁধে।
আরো পড়ুন : গোয়েন্দা গল্প : ব্যাঙ্কের নথি চুরির রহস্যের সমাধান
মুনমুন তার অনুভূতি দমিয়ে বলল, “রণ, তুই জানিস না, তোর জন্য আমাদের কেমন লাগে। প্রতি ভাইফোঁটায় মনে হয়, যদি তোর কাছে যেতে পারতাম! ছোটবেলার সেই ফোঁটার দিনগুলো যেন চোখের সামনে বারবার ভেসে ওঠে।”
স্বর্ণালীর গলা ভারী হয়ে উঠল, যেন মনের কষ্টটা আর ধরে রাখতে পারছে না। সে বলল, “তুইও আমাদের থেকে কম কষ্ট পাচ্ছিস না, রণ! তোর থেকেও অসহায় আমরা হয়তো। তোকে দেখতে পারছি না, আর তুইও তো আসতে পারছিস না। ছোটবেলার সেই আনন্দঘন মুহূর্তগুলো ছাড়া আজ আমাদের আর কিছুই অবশিষ্ট নেই।”
এই কথাগুলো শুনে রণের মনেও এক চাপা কষ্ট ফুঁসে উঠল। তার চোখের কোণে জল এসে গেল, কিন্তু সে নিজেকে সামলে নিল। সে জানে, তার মনের কষ্টের কথা প্রকাশ করে দিদিদের মন আরও ভারী করতে চায় না। তার মধ্যে এক শূন্যতার অনুভূতি তৈরি হয়, যেন জীবন আগের মতো আর কখনোই হবে না।
মুনমুন, স্বর্ণালী আর রণ—তিনজনের এই নীরবতা যেন তাদের বাস্তবতাকে স্পষ্টভাবে মেনে নেওয়ার চেষ্টা। একসময়ের সেই ফোঁটার দিন আর আজকের নিঃসঙ্গতা যেন দুটো সম্পূর্ণ ভিন্ন পৃথিবী, একে অপরের থেকে বহু দূরে।
হঠাৎ মুনমুন ধীরে বলল, “শোন, এবার তো তোর কাছে আসতে পারলাম না ঠিকই। কিন্তু একটা কথা দিচ্ছি, সামনের বার যেভাবেই হোক, আমরা আসব। তোর এই নিঃসঙ্গ ভাইফোঁটা আর একা কাটাতে দেব না তোকে।”
রণ হালকা ম্লান হাসি দিয়ে বলল, “ঠিক আছে, আমি তোদের অপেক্ষায় থাকব।” যদিও জানে, হয়তো সবসময় আশা মতো কিছু ঘটে না, তবুও এই সামান্য প্রতিশ্রুতিটুকুই যেন তার মনে খানিকটা আশার আলো জ্বালায়।
ওপাশ থেকে স্বর্ণালী কাঁপা গলায় বলল, “রণ, তুই জানিস, আমরা তোকে কতটা ভালোবাসি, তাই না? আমাদের জন্য একটু হলেও শক্ত থাকিস।” এই সহজ কথাগুলোর মধ্যে লুকিয়ে থাকা স্নেহ আর ভালোবাসার প্রতিটা শব্দ যেন রণকে সামান্য সান্ত্বনা দেয়। সে অনুভব করে, এই বিশেষ দিনটিতে একে অপরের সাথে না থাকলেও ভালোবাসার এই বন্ধন তাদের দূরত্বের সীমানা পার করে এক সুতোয় বেঁধে রেখেছে।
শেষে, ভাইফোঁটার স্মৃতিগুলো নিয়ে রণ ফোনটা রেখে চুপচাপ বসে রইল। মনে মনে আবার সেই পুরোনো দিনগুলোর মধ্যে ভেসে গেল, যেখানে তিনজনের এই ছোট্ট পরিবার ছিল একে অপরের সবচেয়ে আপন।
© পিনাকী রঞ্জন পাল