জলপাইগুড়ি বিবেকানন্দ পল্লির বাসিন্দাদের আবাস-বঞ্চনার প্রতিবাদে প্রতীকী আন্দোলন

জলপাইগুড়ি: সরকারি আবাস যোজনায় ঘর না পাওয়ায় ক্ষোভে ফেটে পড়লেন জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের খড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের বিবেকানন্দ পল্লির বাসিন্দারা। রবিবার সকালে ধর্মুদেব হাই স্কুলের সামনে প্ল্যাকার্ড হাতে দাঁড়িয়ে প্রতীকী আন্দোলনে সামিল হন এলাকার শতাধিক বাসিন্দা। বৃদ্ধ থেকে শুরু করে গৃহবধূ—সকলেই তাদের বঞ্চনার কথা তুলে ধরেন।

বিবেকানন্দ পল্লির বাসিন্দাদের অভিযোগ, বারবার পঞ্চায়েতে জানানো সত্ত্বেও কেউ সরকারি ঘর পাননি। প্রবীণ বাসিন্দা মালা রায় বলেন, “একটি ছোট্ট টিনের ঘরে বাচ্চাদের নিয়ে থাকি। বৃষ্টি হলে ঘরে জল ঢোকে। ভোটের সময় ঘর দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু কোনও লাভ হয়নি।”

একই অভিযোগ গৃহবধূ দুলালী বালার। তিনি বলেন, “আমরা বহু আগেই সব নথি জমা দিয়েছি। আশপাশের গ্রামের লোকেরা ঘর পেয়েছেন, অথচ আমাদের গ্রামে একজনও ঘর পাননি। এটা সম্পূর্ণ অবিচার।”

খড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরোধী দলনেত্রী জয়া সরকার বিশ্বাস বলেন, “এলাকায় প্রায় ছয় থেকে সাত হাজার মানুষ থাকেন, কিন্তু একটিও সরকারি ঘর দেওয়া হয়নি। মূলত টেকনিক্যাল ত্রুটির কারণে বাসিন্দাদের নাম তালিকা থেকে বাদ পড়েছে। কিন্তু একজনের ভুলের খেসারত গোটা গ্রাম কেন দেবে?”

Symbolic movement to protest housing deprivation of residents of Jalpaiguri Vivekananda Palli

এই বিষয়ে সদর বিডিও মিহির কর্মকারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি টেলিফোনে জানান, এখনও পর্যন্ত তিনি কোনও লিখিত অভিযোগ পাননি।

তবে খড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান মনোজ ঘোষ স্বীকার করেছেন যে, ২০১৮ সালের সার্ভেতে প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণে উপভোক্তাদের নাম তালিকা থেকে বাদ পড়ে। তিনি বলেন, “পুনরায় সার্ভে করে উপভোক্তাদের নাম সংগ্রহ করা হবে। সকলকে ঘর পাইয়ে দেওয়ার জন্য আমরা চেষ্টা চালাবো।”

এলাকাবাসী স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, দ্রুত সমাধান না হলে তারা পঞ্চায়েত ও বিডিও অফিস ঘেরাও করবেন।

স্থানীয় বাসিন্দা নিমাই ভক্ত বলেন, “আমরা গরিব মানুষ। ভোটের আগে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়, পরে আর কাউকে খুঁজে পাওয়া যায় না। এবার যদি আমাদের দাবি না মানা হয়, তবে বৃহত্তর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবো।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *