নিজস্ব সংবাদদাতা, জলপাইগুড়ি : বামফ্রন্টের আইন আমান্য আন্দোলনকে ঘিরে উত্তেজনা জলপাইগুড়ি ডিএম অফিসে।
বীরভূম জেলার রামপুর হাটের গণহত্যায় দোষীদের শাস্তি সহ বারো দফা দাবিতে বামফ্রন্টের আইন অমান্য, দুশো জনকে গ্রেফতার করেই মুক্তি দিল পুলিশ।
মঙ্গলবার রাজ্যের অন্যান্য জেলার সঙ্গে জলপাইগুড়ি জেলা বামফ্রন্টের ডাকে এক আইন অমান্য কর্মসূচির মাধ্যমে একদিকে যেমন সাধারণ মানুষের পক্ষে বারোটি দাবি পেশ করা হয়। তার পাশাপাশি সদ্য এই রাজ্যের বীরভূম জেলার রামপুরহাটে তৃণমূল কংগ্রেসের অন্তর্দ্বন্দের কারণে এখন পর্যন্ত যে বারো জনের গণহত্যার ঘটনা সামনে এসেছে সেই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত প্রকৃত দোষীদের উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানানো হয়। বামফ্রন্টের মিছিল জলপাইগুড়ি জেলা বামফ্রন্ট দপ্তর সুবোধ সেন ভবন ডিবিসি রোড থেকে বের হয়ে শহর পরিক্রমা করে মঙ্গলবার দুপুরে জলপাইগুড়ি জেলা শাসকের অফিস অভিমুখে যেতে চাইলে মাঝ পথেই রীতিমতো ব্যারিকেড করে সেই মিছিল আটকে দেয় পুলিশ। এরপর সেই ব্যারিকেড ভেঙ্গে মিছিল পৌঁছয় এসপি অফিস পার করে ডিএম অফিসের সামনে। সেখানে অবস্থান বিক্ষোভ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
বিক্ষোভ কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক সলিল আচার্য,আরএসপি নেতা পরিতোষ ঘোষ, সারা ভারত ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা গোবিন্দ রায় সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক সলিল আচার্য বলেন রামপুরহাটে আগুন লাগিয়ে পৈশাচিক হত্যাকান্ডের ঘটনার প্রতিবাদে, আনিস হত্যাকান্ডে বিচার সহ একাধিক দাবিতে, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের কর্পোরেট হিন্দুত্বের মিশেল ঘটিয়ে দেশ বিক্রির চক্রান্তের প্রতিবাদে আগামী ২৮ ও ২৯ শে মার্চ সারা ভারত জুড়ে শ্রমিক কর্মচারীদের ডাকা সারা ভারত ধর্মঘটের স্বপক্ষে আইন আমান্য কর্মসূচী গ্রহণ করেছে বামপন্থীরা। এদিন জেলাশাসকের দপ্তরের আগে ব্যারিকেড ভেঙে বাম সমর্থকরা জেলাশাসক দপ্তরে যেতে চাইলে পুলিশ মিছিলের পথ আটকায়। প্রথম ব্যারিকেড ভেঙ্গে দ্বিতীয় ব্যারিকেড সামনে মিছিল পৌঁছলে পুলিশ গ্রেপ্তার করে বামপন্থী নেতৃবৃন্দসহ মিছিলের সকলকে। ডিএসপি সমীর পাল মাইকে ঘোষণা করেন আইন অমান্য কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করা সকলকে গ্রেফতার করে, বিনা শর্তে মুক্তি দেওয়া হল। রামপুরহাটের ঘটনা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক আচার্য বলেন, গোটা রাজ্য জুড়ে শাসক দল গণতন্ত্র হরণ করে তৃণমূলী গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করায় আজ নিজেরাই নিজেদের দ্বারা আক্রান্ত হচ্ছে। এধরনের গণহত্যা সাম্প্রতিক সময়ে বিরল এর বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করবে বামপন্থীরা। পুলিশ যেখানে দলদাস সেখানে মানুষকে নিজেদের একত্রিত হয়েই এ ধরনের আক্রমণ প্রতিহত করতে হবে। তিনি বলেন, যদিও এটা শাসক তৃণমূল কংগ্রেস দলের অন্তর্দ্বন্দের ফল, তবে এরপর এমন ঘটনা সমগ্র রাজ্যকেই গ্রাস করবে। এই সব বিষয়গুলোকে সাধারণ মানুষের সামনে তুলে ধরতে খেটে খাওয়া জনগণের স্বার্থে এই ধরণের আন্দোলন জারি রাখবে বামফ্রন্ট।