বড়দিনের আগমনে সেজে উঠছে ঐতিহাসিক সেন্ট মাইকেল এন্ড অল এঞ্জেলস চার্চ

জলপাইগুড়ি : বড়দিন মানেই জলপাইগুড়িবাসীর কাছে বিশেষ এক অনুভূতি। আর এই উৎসবের কেন্দ্রবিন্দু হল শহরের ঐতিহাসিক সেন্ট মাইকেল এন্ড অল এঞ্জেলস চার্চ। ১৮৬৮ সালে ইংরেজদের হাতে নির্মিত এই চার্চ আজও অতীতের স্মৃতির অনন্য সাক্ষী। বড়দিন উপলক্ষে প্রতিবারের মতো এবারও সাজিয়ে তোলা হচ্ছে এই চার্চটি।

চার্চের ভেতরে ও বাইরের প্রতিটি অংশ যেন একেকটি ইতিহাসের পাতা। দেড়শো বছরের পুরনো এক ঘন্টা, যা একসময় ইংল্যান্ডে তৈরি হয়েছিল, আজও নির্দিষ্ট সময়ে বাজে, তার প্রতিধ্বনি ছড়িয়ে পড়ে জলপাইগুড়ির আকাশে। চার্চের জানালার রঙিন কাচের ভেতর যিশু খ্রীষ্ট এবং ইংরেজ রাজপরিবারের বিভিন্ন ছবি ফুটে ওঠে, যা সেই যুগের শিল্প ও সংস্কৃতির এক অপূর্ব নিদর্শন।

St. Michael and All Angels Church getting decorated for Christmas

চার্চের চারপাশে ছড়িয়ে আছে বহু ইংরেজ চা বণিকের সমাধি। শ্যাওলায় ঢাকা কিছু সমাধি আজও প্রাচীন দিনের স্মৃতি বহন করছে। বিশেষ করে ১৮৭৭ সালে টি-প্ল্যান্টার ওয়াল্টার আলেকজান্ডার জন থমসনের স্ত্রী শার্লি থমসনের সমাধি আজও এখানে রয়েছে। যদিও অনেক স্মৃতিচিহ্নের সংরক্ষণে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তবুও চার্চটির রক্ষণাবেক্ষণে প্রয়োজন আরও সচেতনতা।

জলপাইগুড়িবাসীর মতে, চার্চের ইতিহাস এবং ইংরেজ চা বণিকদের স্মৃতি শুধুমাত্র একটি সময়ের প্রতিনিধিত্ব নয়, বরং এটি উত্তরবঙ্গের এক বিশেষ ঐতিহ্যের পরিচায়ক। এটির যথাযথ সংরক্ষণ আগামী প্রজন্মের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

বড়দিনের আনন্দে মাতোয়ারা হতে আসা মানুষজন এই ঐতিহাসিক স্থাপনার সৌন্দর্য এবং তার ইতিহাসের মধ্যে ডুব দিতে প্রস্তুত। শিলিগুড়ি থেকে শুরু করে দূর-দূরান্তের পর্যটকরা বড়দিনে এই চার্চে এসে এর অতীত গৌরবের ছোঁয়া অনুভব করবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *