বিশ্বজিৎ নাথ, কলকাতা, ৮ নভেম্বর’২৩ : কাঁচড়াপাড়ার বনগাঁ রোডের ওপর অবস্থিত কুখ্যাত রঘু ডাকাতের স্মৃতি বিজড়িত পাঁচশো বছরের অধিক প্রাচীন বাবুব্লকের ডাকাত কালীবাড়ি। কথিত আছে, অষ্টাদশ ও ঊনবিংশ শতাব্দীতে বাংলার প্রায় সর্বত্রই ডাকাতদের আস্তানা ছিল। জঙ্গলে ঘেরা এই কাঁচড়াপাড়ার বাবুব্লক একদা ছিল ডাকাত সর্দার রঘু ডাকাত ও তাঁর শাকরেদদের মুক্তাঞ্চল। ইতিহাস বলছে, এখানে নিম গাছের নীচে ছিল কালি মায়ের থান।

ডাকাতেরা মায়ের থানে সিঁদুর-চন্দন চর্চিত করে পুজো করে ডাকাতির উদ্দেশ্যে বের হত। কিন্তু আজ সবই বিস্মৃতির অতলে। ঊনবিংশ শতাব্দীর ছয়ের দশকের শেষের দিকে উত্তর প্রদেশের গোরক্ষপুর থেকে এক পন্ডিত ব্রাহ্মণ সন্তান এসে জঙ্গল পরিষ্কার করেছিলেন।

দিনের বেলায় পন্ডিত জী গান গেয়ে সময় কাটাতেন। স্থানীয়রা তাঁর গানে মুগ্ধ হয়ে তাঁকে একটি হারমোনিয়াম উপহার দিয়েছিলেন। পরবর্তীকালে সেই হারমোনিয়াম বাবা ডাকাত কালীর থান সংস্কার করে তামার ফলকে দক্ষিণাকালির মূর্তি খোদিত করেন। পরবর্তীতে এলাকার মানুষজনের সহায়তায় হারমোনিয়াম বাবা কালি মন্দিরের ডান দিকে সীতারাম মন্দির ও বাঁদিকে বজরংবলির মন্দির গড়ে তোলেন। এখানে দেবীর নিত্য পুজো হয়।

তাছাড়া কার্তিক মাসের অমাবস্যা তিথিতে এখানে উৎসব হয়। দেবী এখানে জাগ্রত। ভক্তদের অনুদানেই আজও টিকে রয়েছে রঘু ডাকাতের স্মৃতি বিজড়িত এই কালীবাড়ি। মনস্কামনা পূরণের জন্য দূরদূরান্ত থেকে ভক্তরা এখানে ছুটে আসেন। যদিও ডাকাত সর্দারের এই আবাসস্থলের সুড়ঙ্গপথ নিয়ে এখনও অন্ধকারে কাঁচড়াপাড়ার মানুষজন। জানা গিয়েছে, তৎকালীন প্রশাসনের তাড়া খেয়ে পালানোর জন্য রঘু ডাকাত তিনটি সুড়ঙ্গপথ তৈরি করেছিলেন।