জলপাইগুড়ি: অবশেষে এল সেই বহুল প্রতীক্ষিত বৃষ্টি! দীর্ঘ চার মাসের খরা কাটিয়ে জলপাইগুড়ি ও উত্তরবঙ্গের চা বলয়ে ফিরে এল প্রাণ। মরশুমের প্রথম ফ্ল্যাশ চা পাতার জন্য মুখিয়ে ছিলেন চা শ্রমিক ও উৎপাদকরা। গত দুই দিনের হালকা বৃষ্টিতে সতেজ হয়ে উঠল চা গাছের কচি পাতা। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই চা শ্রমিকরা নরম হাতে তুললেন দুই পাতা এক কুঁড়ির সেই প্রথম ফ্ল্যাশ।

গতবারের খরায় ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছিলেন ক্ষুদ্র চা চাষিরা। অনাবৃষ্টি ও শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে চা গাছ ছিল বিবর্ণ, উৎপাদনও কমছিল। রোগ-পোকার আক্রমণে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছিল। অবশেষে দোলের আগেই স্বস্তির বৃষ্টি হওয়ায় উজ্জীবিত গোটা চা মহল্লা।

ডেঙ্গুয়াঝার চা বাগানের শ্রমিকরা বলেন, “বৃষ্টি হলেই কচি পাতা আসবে, আমরা বেশি করে তুলতে পারব। গতবার অনেক ক্ষতি হয়েছিল, এবার ভালো দাম পাব এই আশায় বুক বেঁধেছি।”
এই প্রথম ফ্ল্যাশ চা পাতাই বছরের সেরা মানের চা উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়। তাই এর বাজারদরও বেশি। বিশেষজ্ঞদের মতে, এবার পর্যাপ্ত বৃষ্টি হলে উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে, আর সেই সঙ্গে চা শিল্পও লাভের মুখ দেখবে।
এক চা শিল্পপতি জানান, “চা উৎপাদন প্রকৃতি নির্ভর। দীর্ঘ চার মাস পর বৃষ্টি হওয়ায় আশা করছি, এবার উৎপাদন অনেক ভালো হবে। গত বছরের ক্ষতির ঘাটতি এবার মিটবে।”
ফেব্রুয়ারি মাস থেকেই চা পাতা তোলার কাজ শুরু হলেও, বৃষ্টির অভাবে কৃত্রিম জলসেচেই চাষিদের নির্ভর করতে হচ্ছিল। কিন্তু এবার প্রকৃতি যেন সহায়। সবুজ চায়ের পাতায় নতুন প্রাণের স্পন্দন, খুশির হাওয়া চা শ্রমিকদের মুখে।
এখন শুধু অপেক্ষা—বৃষ্টির ধারাবাহিকতা বজায় থাকলেই চা উৎপাদনে আসবে সোনালি দিন।