সংবাদদাতা, জলপাইগুড়ি : জলপাইগুড়ি পুরসভার প্রাক্তন উপ পুরমাতা অপর্না ভট্টাচার্য ও তার স্বামী সুবোধ ভট্টাচার্যের আত্মহত্যার পেছনে প্ররোচনা দেওয়ার জন্য জলপাইগুড়ি যুব তৃণমূলের প্রভাবশালী নেতা দায়ী। শিশু পাচার, শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেপ্তার হওয়া তৃণমূল নেতা শান্তনু, কুন্তলের সাথে যোগাযোগ রয়েছে এই যুব নেতার।

এই জোড়া আত্মহত্যার ঘটনায় জেলা পুলিশ কিছুই করছে না। পুলিশ অভিযুক্তদের না ধরলে বিজেপি হাইকোর্টে আবেদন করে সিবিআই তদন্তের দাবী জানাবে। রাজ্যে তিলজলা সহ কোনও ঘটনাতেই রাজ্য পুলিশের উপর ভরসা নেই রাজ্যবাসীর। তাই সিবিআই তদন্ত করা দরকার। রবিবার জলপাইগুড়িতে মৃত অপর্না ভট্টাচার্যের বাড়িতে তার মেয়ে তানিয়া ভট্টাচার্যের সাথে সাক্ষাৎ করার পর সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময় এই মন্তব্য করেন বিজেপির সর্ব ভারতীয় সাধারন সম্পাদক দিলীপ ঘোষ। দিলীপ ঘোষ বলেন, প্রায় এক মাস হতে চললো জলপাইগুড়ির দুই সমাজ কর্মীর অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনার। তবে আজ পর্যন্ত ওই ঘটনায় অভিযুক্তরা কেউ গ্রেপ্তার হয়নি, এমনকি মৃতদের লেখা সুইসাইড নোট এখনো জমা পড়েনি কোর্টে।

দিলীপ বাবু বলেন, এতদিন পরেও এই ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা হাস্যকর, এই ঘটনায় যার নাম প্রধান অভিযুক্ত হিসেবে সুইসাইড নোটে রয়েছে সেই তৃনমূল যুব নেতা আজও প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে, শুধু তাই নয় ওই যুব তৃনমূল নেতা অভিষেক ব্যানার্জির সভামঞ্চ আলোকিত করছে। আর প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ কিছুই করছে না। তিনি অভিযোগ করেন, শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে গ্রেপ্তার তৃণমূল নেতা কুন্তল, শান্তুনুদের সাথেও জলপাইগুড়ির অভিযুক্ত যুব নেতার যোগাযোগ আছে। এমনটি শান্তুনু এই যুব নেতার বাড়িতেও এসেছিলেন বলে দাবি জানান দিলীপ বাবু। নানান অসামাজিক কাজের সাথেও জড়িত জলপাইগুড়ির অভিযুক্ত যুব তৃণমূল নেতা বলে জানান দিলীপ বাবু। তিনি বলেন, এটা আমার কথা নয়, তার পার্টির লোকেরাও বলে। কিন্তু পয়সা ও ক্ষমতা থাকার জন্য পুলিশ তার গায়ে হাত দিতে পারছে না। দিলীপ বাবু জানান, ভট্টাচার্য দম্পতির অস্বাভাবিক মৃত্যুর সঠিক বিচার না পেলে তারা বিষয়টি নিয়ে উচ্চ আদালতে যাবেন। এদিন দিলিপ ঘোষের সঙ্গে ছিলেন জলপাইগুড়ির সাংসদ জয়ন্ত কুমার রায়, বিজেপি জেলা সভাপতি বাপি গোস্বামী।

অন্যদিকে মৃত দম্পতি মেয়ে তানিয়া ভট্টাচার্য বলেন,”নিরাপত্তা চেয়েছিলাম কিন্তু পাইনি। শুধুমাত্র বাড়ির আশপাশে পেট্রোলিং করানো হচ্ছে। যতক্ষণ না অভিযুক্তরা গ্রেফতার হচ্ছে ততক্ষণ পুলিশের প্রতি ভরসা নেই। তবে দিলীপ বাবু এসেছিলেন কথা হয়েছে। তিনি বলেন, আমার থেকে কোনো অনুমতি বা এনওসি না নিয়েই ঘরে প্রবেশ পথে কে বা কারা সিসি ক্যামেরা লাগিয়ে দিয়েছে।

রবিবার বিজেপি নেতা দীলিপ ঘোষ এর আগেই ভট্টাচার্য বাড়িতে আসেন মৃত সুবোধ ভট্টাচার্যের দিদি তথা বিজেপি বিধায়ক শিখা চ্যাটার্জি। দিলীপ বাবুর আগমন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, উনি আমার দলের উচ্চ নেতৃত্ব, এসেছেন, আমি আমার ভাইঝির জন্য কিছু কাপড়চোপড় দিতে এসেছি। পুলিসের ভূমিকা নিয়ে জানতে চাইলে ক্ষোভের সঙ্গে শিখা দেবী বলেন, এফআইআর করার পরেও অভিযুক্তরা এখনো পর্যন্ত গ্রেপ্তার হলো না। সবাই চটি চাটছে।