লক্ষ্মী পুজো শেষ হয়ে যাওয়ার পর ফের দুর্গাপুজো শুরু হয়ে গেল জলপাই‌গুড়িতে (ভিডিও সহ)

সংবাদদাতা, জলপাইগুড়ি, ১৩ অক্টোবর : জমে উঠেছে ঐতিহ্যবাহী মহারাজ মেলা। করোনা কাটিয়ে দুই বছর বাদে বন দুর্গা পুজোকে কেন্দ্র করে জলপাইগুড়ির রংধামালির মহারাজের মেলা জমে উঠল। সদর ব্লকের রংধামালিতে বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে তিনদিন ব্যাপী মেলা। এদিন নিয়ম ও নিষ্ঠার সঙ্গে একদিনে দুর্গা পুজো হল। পুজোকে কেন্দ্র করে গ্রামে এখন উৎসবের আমেজ। পুজো শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও ফের নতুন করে এখানে পুজোর আনন্দে মেতে উঠেছে‌ন কয়েক হাজার মানুষ। টানা ১৪১ বছর ধরে এখানে এই পুজো হচ্ছে দাবি উদ্যোক্তাদের। উল্লেখ্য প্রতি বছর লক্ষ্মী পুজোর পরের বৃহস্পতিবার এই পুজো হয়।

করোনার কারণে দুই বছর ধরে মেলা হয়নি। এদিন থেকে শুরু হয়েছে তিনদিন ব্যাপী মেলা। কথিত রয়েছে মর্ত‍্যে পুজোর শেষে সপরিবার কৈলাস ফেরার সময়ে রংধামালির আমবাগানে বিশ্রাম নিতে আসেন দেবী দুর্গা। তা জানতে পেরে ওই বাগানের মালিক মহারাজ গ্রামবাসীদের খবর দেন। খবর পেয়ে বাগানে দূর্গা ও তাঁর সন্তানদের পূজো করেন সকল গ্রামের মানুষজন । একদিন গ্রামে থেকে যাওয়ার অনুরোধ করেন গ্রামবাসীরা। তাতে রাজী হন দেবী। দেবী ফিরে যাওয়ার সময় আশীর্বাদ করেন এই গ্রাম সব সময় শস্যশ্যামলা হয়ে থাকবে।

The traditional Ban Durga Puja and Maharaj Mela have gathered in Jalpaiguri

এরপর থেকে প্রতিবছর এই দিনে দশভূজার পুজো হয়ে আসছে। মহারাজের বাগানে দেবী দুর্গা বিশ্রাম করেছিলেন এমন জনশ্রুতির কারণেই মেলার নাম হয়েছে মহারাজ মেলা। এখানে পূজিত দুর্গা প্রতিমার রূপ সাবেকিয়ানা। লক্ষ্মী, গণেশ, সরস্বতী, কার্তিক ও মহাদেবের পাশাপাশি জয়া ও বিজয়ার প্রতিমাও স্থান পেয়েছে। এই পুজোর বৈশিষ্ট চার দিনের বদলে এক দিনেই ষষ্ঠী, সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী পুজো হয়। দুর্গা পূজার পাশাপাশি এখানে একইসাথে কালীপূজাও হয়। এই পুজো ও মেলা উপলক্ষ্যে এখানকার মেয়েরা যাদের অন্যত্র বিয়ে হয়েছে বা এখানকার যারা কর্মসূত্রে বাইরে থাকেন তারা সকলেই এখানে আসেন। সেইসাথে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রচুর লোকজন ভীড় জমায় এখানে। এই মেলা এক মিলনমেলায় পরিণত হয়।

গ্রামবাসী বেবী রায় বলেন, এই পুজোয় এসে সকলের সাথে দেখা হচ্ছে, কথা হচ্ছে খুব ভালো লাগছে। গত দুই বছর করোনার জন্য মেলা হয় নি, এবার পুজোর সাথে মেলাও হচ্ছে। দারুন আনন্দ করছেন।

পুরোহিত বিষ্ণু চক্রবর্তী জানান, এবার করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকায় সবাই প্রানভরে আনন্দ করতে পারবেন।

মেলার সভাপতি কৃষ্ণ দাস জানান, পুজো উপলক্ষে তিনদিন ধরে মেলা চলবে। জলপাইগুড়ি‌র প্রাচীন এই মেলা মহারাজার মেলা নামেই পরিচিত। পুজোর বাজেট ধরা হয়েছে দশ লক্ষ টাকা।

Leave a reply

  • Default Comments (0)
  • Facebook Comments

Your email address will not be published. Required fields are marked *