আমিরুল ইসলাম, মালদা, ১০ নভেম্বর’২৩ : হিন্দু- মুসলিম সম্প্রীতির অপূর্ব নিদর্শন দেখা যায় এই গ্রামের কালীপুজোয়। এক মুসলিম মহিলার নামেই হয় এই কালীপূজাটি। গ্রামবাসীরা সকলে এই পুজোয় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন৷ জানা গেছে গ্রামে এই একটিমাত্র মুসলিম পরিবার, বাকিরা সকলেই হিন্দু। এই কালীপুজো শুরু হয়েছিল একজন মুসলিম মহিলার স্বপ্নাদেশে পাওয়ার পর।

মালদার হাবিবপুর ব্লকের বুলবুলচণ্ডী অঞ্চলের মধ্যে কেন্দুয়া গ্রামের রেললাইন ঘেঁষা এই কালীর স্থান। মুসলিম মহিলার নাম শেফালি বেওয়া। তার নামেই এই পুজো হয়। তিনি জানান, প্রায় বছর ৪৫ আগে তাঁর খুব অসুখ হয়েছিল এবং কোনও চিকিৎসক তাঁর রোগ ধরতে পারেননি। হঠাৎ মুসলিম মহিলা শেফালি বেওয়া স্বপ্ন দেখেন মা কালীর পুজো করলে তাঁর অসুখ সেরে যাবে। তিনি প্রথমে নিজেও হিন্দু দেবীর এই স্বপ্নাদেশ পেয়ে হতভম্ব হয়ে যান। এরপর স্বপ্নাদেশের কথা তিনি গ্রামবাসীকে জানালে প্রথমে গ্রামবাসীরা কেউ এই বিশ্বাস করতে চাননি।

মুসলিম মহিলা কালী পুজো করবে এই কথা ছড়িয়ে পড়ে গোটা এলাকায়। গ্রামবাসীদের কাছ থেকে জানা যায়, শেফালি দেবীর শরীরে ভর করে মা কালী এই পুজো করার কথা বলেন৷ তা শুনেই শুরু হয় কালীপুজো। গ্রামে কারও অসুখ করলে বা কেউ কোনও বিপদে পড়লে, তখন তারা শেফালি দেবীর কাছেই ছুটে আসেন। যখন শেফালি দেবীর শরীরে মা কালী ভর করেন তখন তাঁদের অসুবিধার কথা জানালে তাঁদের সব অসুখ ও বিপদ দূর হয়ে যায় বলে দাবি গ্রামবাসীদের। গ্রাম ছাড়াও জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে এই মায়ের কাছে ছুটে আসেন অনেক ভক্তরা।

ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে মা কালীর মূর্তি তৈরির কাজ। এই কালীর পুজো রেললাইনের ধারে ছোট একটা জায়গায় হয়ে আসছে। শেফালি নাম থেকে কালীর নাম হয়ে গিয়েছে শেফালি কালীপুজো। গ্রামবাসীরাই মিলিতভাবে রেললাইনের ধারে মা কালীর একটি বেদি করে দিয়েছেন। সেখানে নিত্যপুজো হয়। আর এই কালীপুজোর দিন মূর্তি পুজো করা হয়। টানা ১৫ দিন ধরে এই পুজো চলে। তারপর সামনের পুকুরে মূর্তি বিসর্জন করা হয়।