সংবাদদাতা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, ১ সেপ্টেম্বর’২৩ : সুন্দরবন অঞ্চলের বাসিন্দারা অধিকাংশই মৎসজীবি। মাছ ধরার কারণে তাদের মাঝেমধ্যেই বাঘের হামলার মুখে পড়তে হয়। সেই হামলা থেকে বাঁচতে তারা ঠাকুরকে প্রতিনিয়ত স্মরণ করেন। তাদের সেই বিশ্বাসকে পুঁজি করেই সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে সম্পর্ক তৈরি করে তাদের কাছে সোনার ঠাকুরের মূর্তি বিক্রি করার প্রলোভন দেখানো হত। তাদের বিশ্বাস অর্জন করার জন্য প্রথমে সোনা দিয়ে তৈরি ঠাকুরের হাত তাদেরকে দেওয়া হত। সেই হাত তারা যে কোনো সোনার দোকানে গিয়ে দেখিয়ে পরীক্ষা করালে তাদের বিশ্বাস বাড়তো। সেই সুযোগ নিয়েই মোটা টাকায় সোনার ঠাকুরের মূর্তি বিক্রির প্রলোভন দেওয়া হত। বিশ্বাস জন্মে যাওযায় নিজের সর্বস্ব দিয়ে অনেকেই এই মূর্তি কিনতে রাজী হতেন। তারপর নির্দিষ্ট জায়গায় যখন তারা মূর্তি নেওয়ার জন্য হাজির হতেন তখন তাদের সর্বস্ব লুঠ করে পালিয়ে যেত দুষ্কৃতিরা।
পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালের আগে এই ধরণের প্রতারণা চক্রের বাড়বাড়ন্ত দেখা দিয়েছিল এই এলাকায়। তখন পুলিশ অভিযান চালিয়ে এই চক্রে জড়িত থাকা মোট ২৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছিল। তারপর এই প্রতারণা চক্র কিছুদিন বন্ধ থাকলেও সম্প্রতি ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। অনেকেই প্রতারিত হচ্ছেন। এই বিষয়ে কুলতুলি থানায় একাধিক অভিযোগও দায়ের হয়েছে। এই প্রতারণা চক্রকে ধরতে কুলতুলি থানার আইসি অর্ধেন্দু শেখর দে সরকারের নেতৃত্বে একটি ফাঁদ তৈরি করা হয়। খদ্দের সেজে মূর্তি কেনার প্রস্তাব দেওয়া হয়। সেই প্রস্তাব অনুযায়ী বুধবার দুপুরে জামতলা মোড়ে দেখা করার সময় স্থির হয়। আগে থেকেই সিভিল পোশাকে মোতায়েন ছিল পুলিশ। হঠাৎ করেই জায়গা পরিবর্তন করা হয়। জালাবেড়িয়া মোড়ে দেখা করার কথা বলা হয়। গ্রাহক জালাবেড়িয়া বাজারে পৌঁছালে পুলিশও পৌঁছে যায়। বিষয়টি বুঝতে পেরে পালানোর ছক করে দুষ্কৃতিরা। বাইকে ধাওয়া করে কুলতুলি থানার পিসি ইনচার্জ এক অভিযুক্তকে ধরে ফেলে। তার নাম তালিমুল। ধৃত এই চক্রের মুল পান্ডা বলে জানা গেছে। তার কাছ থেকে একটি ওয়ান সাটার, লাইভ কার্তুজ, একটি বাইক ও দুটি মোবাইল বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ।